বিনা কর্তনে সেন্সর ছাড়পত্র পেয়েছে মোহাম্মদ নুরুজ্জামানের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য শিশুতোষ চলচ্চিত্র “আম-কাঁঠালের ছুটি”। ৭ ফেব্রুয়ারি বিকেলে চলচ্চিত্রটির প্রযোজক-পরিচালক মোহাম্মদ নূরুজ্জামান বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড দপ্তর থেকে চলচ্চিত্রটির সেন্সর সনদ গ্রহণ করেন।
২ ফেব্রুয়ারি শরীফ উদ্দিন সবুজের গল্প অবলম্বনে নির্মিত এই চলচ্চিত্রটি পরীক্ষণের সময় সেন্সর কমিটির সদস্যরা খুবই নস্টালজিক হয়ে পড়েন বলে জানা যায়। বোর্ড সদস্যরা বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে ব্যতিক্রমী এবং প্রয়োজনীয় একটি কাজ হিসেবে চলচ্চিত্রটির ভূয়সী প্রশংসা করেন।
চলচ্চিত্রের দৃশ্যপট, সাবলীল অভিনয় আর বাস্তবানুগ কাহিনী বিন্যাসে তারা মুগ্ধ হন। বাংলাদেশের চিরায়ত সংস্কৃতি আর সহজ-স্বাচ্ছন্দ্য জীবনবোধের এই গল্পে নিজেদেরকে সহজেই মেলাতে পারছিলেন স্টার সিনেপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত সেন্সর স্ক্রিনিংয়ে উপস্থিত এক একজন সদস্য।
নির্মাতা জানান, ‘গত শতাব্দীর আশি এবং নব্বই দশকে শৈশব-কৈশোর পেরুনো প্রজন্ম নিজেদের যাপিত শৈশব খুঁজে পাবেন গ্রামীণ পটভূমিতে নির্মিত এই চলচ্চিত্রে। আমার মেয়েকে নিজের শৈশব দেখানোর একটা প্রচেষ্টা হিসেবেই ছবিটা তৈরি করতে শুরু করেছিলাম। বলতে গেলে সেন্সর স্ক্রিনিংয়েই আমার অত্যন্ত পরিচিত গণ্ডীর বাইরের কেউ প্রথমবারের মতো ছবিটা দেখল। অনেকটা ব্যক্তিগত এই ছবি যে অন্যদেরকেও ছুঁতে পারছে এটা জেনে খুবই ভালো লাগছে। সেন্সর কমিটির সদস্যরা দায়িত্বের খাতিরেই বাংলাদেশে তৈরি সমসাময়িক সব সিনেমা দেখে থাকেন, তো তারা যখন এই কাজটাকে অন্য সিনেমাগুলো থেকে ব্যতিক্রম বলছেন-তাতে মনে হয় কাজটার পেছনে ব্যয় করা আমার প্রায় ছয় বছরের সময় আর শ্রম সার্থক।’
খুব ছোট্ট একটা কারিগরি ইউনিট আর এক ঝাঁক আনকোরা অপেশাদার অভিনয় শিল্পী নিয়ে একটা লম্বা সময় ধরে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় চলচ্চিত্রটির দৃশ্যধারণ করা হয়। প্রযোজনা ও পরিচালনার পাশাপাশি চিত্রনাট্য ও সংলাপ রচনা, চিত্রগ্রহণ, সম্পাদনা এবং সাউন্ড ডিজাইন করেছেন মোহাম্মদ নূরুজ্জামান নিজেই। এই সিনেমার প্রধান সহকারী পরিচালক ছিলেন ‘আদিম’ খ্যাত নির্মাতা যুবরাজ শামীম।
বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন জুবায়ের, লিয়ন, আরিফ, হালিমা, তানজিল, ফাতেমা এবং কামরুজ্জামান কামরুল।
গত বছর ২৬ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় অনুষ্ঠিত জগজা এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে “আম-কাঁঠালের ছুটি” সিনেমার ইন্টারন্যাশনাল প্রিমিয়ার হয়, এশিয়ান পার্স্পেক্টিভ বিভাগে ছবিটির আর একটি প্রদর্শনীও হয় সেখানে। উৎসব কমিটি এবং উপস্থিত দর্শকেরাও ছবিটির প্রশংসা করে। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতি থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী চলতি বছরের ২১ জুলাই সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির জন্য আবেদন করা হয়েছে।
You must be logged in to post a comment.