দক্ষিণ কোরিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে শত্রুতার বলি হলো এক যুবক। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার সিনেমা দেখেছেন। গান শুনেছেন। এতেই তাকে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে উত্তর কোরিয়া সরকার।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন বলছে, দক্ষিণ হোয়াংহাই প্রদেশের ওই যুবককে ৭০টি দক্ষিণ কোরিয়ার গান শোনা, তিনটি সিনেমা দেখা এবং তা অন্যদের দেওয়ার কারণে ২০২২ সালে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। তার বয়স ছিল ২২ বছর। তথ্যটি ৬৪৯ জন উত্তর কোরিয়া ত্যাগ করা ব্যক্তির সাক্ষ্য থেকে নেয়া হয়েছে।
এর আগে, ২০২০ সালে উত্তর কোরিয়ায় দক্ষিণ কোরিয়ার গান, সিনেমা নিষিদ্ধ করা হয়। বিশেষ করে তরুণরা যেন বাইরের কোনো সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত না হয়, সেই লক্ষ্য উত্তর কোরিয়ার কর্তৃপক্ষের ব্যাপক প্রচেষ্টার বিবরণ প্রতিবেদনে দেয়া হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, উত্তর কোরিয়ায় মোবাইল ফোনগুলোকে প্রায়ই পরীক্ষা করা হয়। পরিচিতির নামের বানান এবং কথোপকথনও পরীক্ষা করে দেখা হয় তাতে দক্ষিণ কোরিয়ার কোনো প্রভাব আছে কিনা। যদিও উভয় কোরিয়া একই ভাষায় কথা বলে। তবে ১৯৫০ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত হওয়া যুদ্ধের পর বর্তমানে এই দুই ভাষায় কিছু পার্থক্য রয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়া ও পশ্চিমা সংস্কৃতি যেন কোনোভাবেই ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২০২০ সালে কঠিন আইন করে উত্তর কোরিয়া। যারা এই আইন ভঙ্গ করে তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হয় কঠোর ব্যবস্থা।
তবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি অস্বীকার করে থাকে উত্তর কোরিয়া। দেশটির দাবি, তাদের নেতাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে এ ধরনের প্রচারণা চালানো হয়।
পশ্চিমা সংস্কৃতির কাছে যেন সাধারণ মানুষ ঘেঁষতে না পারেন সেই প্রচেষ্টা উত্তর কোরিয়ায় চলছে দ্বিতীয় কিম জংয়ের এর আমল থেকে। তার ছেলে কিম জং উন ক্ষমতায় আসার পর এই প্রচেষ্টা আরও কঠোর করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে পরিচালিত ‘রেডিও ফ্রি এশিয়া’ ২০২২ সালে জানিয়েছিল ‘পুঁজিবাদ’ ফ্যাশন ও চুলে কাটিং দেয়ার ওপরও কর্তৃত্ব স্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে থাকে উত্তর কোরিয়া।
You must be logged in to post a comment.