চিত্রনায়িকা পরী মণির বাসায় নিয়মিত রাতযাপনসহ অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় চাকরি হারাতে যাচ্ছেন পুলিশ কর্মকর্তা গোলাম সাকলায়েন। তাঁকে ‘বাধ্যতামূলক অবসর’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এবার সেই সাকলায়েনের সম্পর্কে গুরুতর অভিযোগ আনলেন মডেল-অভিনেত্রী পিয়া জান্নাতুল।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) দুপুরে এক ফেসবুক পোস্টে পিয়া জান্নাতুল লেখেন, ‘এই সেই ব্যক্তি (গোলাম সাকলায়েন), আব্বার এফআর টাওয়ার মামলায় যিনি ডিবি থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন। প্রায় ৬-৭ দিন আমি আর আম্মা প্রতিদিনই আব্বাকে দেখতে ডিবি অফিসে যেতাম। এই সেই ব্যক্তি যিনি প্রতারণামূলকভাবে এবং জোরপূর্বক সিআরপিসি-এর ১৬৪ ধারার অধীনে জবানবন্দির জন্য জোরপূর্বক আব্বার সম্মতি নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।’
তিনি আরও লেখেন, ‘আমি আব্বাকে সম্মতি না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলাম, কারণ তিনি এ ঘটনায় মোটেও জড়িত ছিলেন না। কিন্তু আমি ডিবি অফিসে পৌঁছার আগেই তিনি (সাকলায়েন) আব্বার কাছ থেকে লিখিত বক্তব্য নিয়ে পরের দিন আদালতে জমা দেন। এসব বিষয়ে হস্তক্ষেপের জন্য তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত হন এবং আব্বাকে আর আমাকে চুপ থাকতে বলেন। অথচ তাঁর জানা ছিল না, আমি চুপ থাকার জন্য জন্মগ্রহণ করিনি।’
সেই ঘটনার বর্ণনা দিয়ে পিয়া লেখেন, ‘যেদিন তিনি এফআর টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডের জন্য জমির মালিক হিসেবে আব্বাকে গ্রেপ্তার করেছিলেন, আব্বা তখন এতটাই অসুস্থ ছিলেন যে তাকে হাসপাতালে যেতে হয়েছিল। তখন আব্বার বয়স ছিল ৭৭ বছরের বেশি!
আইনজীবী পিয়া জান্নাতুল বলেন, ‘আমার দেখা মতে, এই জনাব গোলাম সাকলায়েন ব্যক্তিটি খুবই তীক্ষ্ম, প্রতিভাবান ও ধূর্ত। কিন্তু একটি ভুল তার সবকিছু শেষ করে দিলো। যদিও আমরা মানুষের অপকর্মের জন্য তাকে ক্ষমা করে দেই। কিন্তু প্রকৃতি ও সর্বশক্তিমান সবসময় সঠিক বিচার করার জন্য রয়েছেন।’
প্রসঙ্গত, পিয়া জান্নাতুল ২০০৭ সালে মিস বাংলাদেশ খেতাব অর্জন করেন। এরপর কর্মজীবন শুরু করেন র্যাম্প মডেলিংয়ের মাধ্যমে, ২০০৮ সালে। ২০১১ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় আয়োজিত ওয়ার্ল্ড মিস ইউনিভার্সিটি শিরোপা অর্জন করেন তিনি। পাশাপাশি মিশরে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড টপ মডেল প্রতিযোগিতায় শীর্ষ মডেল হওয়ার সাফল্য অর্জন করেছেন পিয়া।
২০১২ সালে ‘চোরাবালি’র মাধ্যমে তার চলচ্চিত্রে অভিষেক। এছাড়া ২০১৩ সালে বাহরাইনে আয়োজিত ‘ইন্টারন্যাশনাল প্রিন্সেস’ প্রতিযোগিতায় বিচারকও ছিলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শৃঙ্খলা-২ শাখা থেকে উপসচিব রোকেয়া পারভিন জুঁই স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদনে সাকলায়েনকে বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান করার জন্য পিএসসি-তে আবেদন করা হয়েছে। সেই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সাকলায়েন ধারাবাহিকভাবে পরী মণির বাসায় নিয়মিত রাত্রিযাপন করতে শুরু করেন। বিভিন্ন সময়ে (দিনে ও রাতে) নায়িকার বাসায় তিনি অবস্থান করেছেন বলে মোবাইলের ফরেনসিক রিপোর্টে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
You must be logged in to post a comment.