বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম সেরা অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি দীর্ঘদিন টিভি নাটকে অভিনয় করে হঠাৎ করেই বাণিজ্যিক সিনেমায় অভিনয় শুরু করেছিলেন। এর নেপথ্যে কী কারণ ছিল?
কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলনের উপস্থাপনায় এনটিভির ‘কী কথা তাহার সাথে’ আয়োজনের এক পর্বে অতিথি হয়ে সেই কারণ জানিয়েছিলেন হুমায়ুন ফরীদি।
সেই সাক্ষাৎকারে হুমায়ুন ফরীদি বলেছিলেন, ‘একটা পর্যায়ে গিয়ে দেখলাম আমার পক্ষে চাকরি করাও সম্ভব না, ব্যবসা করাও সম্ভব না। আমি অভিনয়টা মোটামুটি খারাপ করি না… এটাই আমি সবচেয়ে কম খারাপ পারি। আমি চিন্তা করলাম, এটার ওপর নির্ভর করে বাঁচতে পারি কি না। তখন চিন্তা করে দেখলাম টেলিভিশনে কাজ করলে আমরা পেতাম ৪২০ টাকা বা ৪২৫ টাকা। সে দিয়ে তো সংসার চালানো সম্ভব না। একমাত্র যদি আমি ফিল্মে কাজ করি, তাহলে ওখানকার যে পারিশ্রমিক, সেটা দিয়ে সংসার চালানো যাবে। ওই উদ্দেশ্যে আমার ফিল্মে যাওয়া।’
হুমায়ুন ফরীদি আরও বলেছিলেন, ‘ফিল্মে যে আমি খুব একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন বা শিল্পে সাধনা করতে গেছি, সেটা একবারেই ভুল।’
হুমায়ুন ফরীদির ক্যারিয়ারের শুরুটা ১৯৬৪ সালে প্রথম কিশোরগঞ্জে মহল্লার মঞ্চনাটক দিয়ে। টিভি নাটকে প্রথম অভিনয় করা নাটক ‘নিখোঁজ সংবাদ’। আর প্রথম সিনেমা ‘হুলিয়া’। এরপর হুমায়ুন ফরীদি আলো ছড়িয়েছেন তিন দশক। নায়ক-খলনায়ক দুই চরিত্রেই মাতিয়ে হয়ে উঠেছিলেন দেশের অন্যতম সেরা অভিনেতা।
হুমায়ুন ফরীদি অভিনীত চরিত্র বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত বিখ্যাত ‘সংশপ্তক’ নাটকে ‘কানকাটা রমজান’ দেশজুড়ে তুমুল আলোচিত হয়েছিল। ‘মাতৃত্ব’ সিনেমার জন্য ২০০৪ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেছিলেন হুমায়ুন ফরীদি। এ ছাড়া নৃত্যকলা ও অভিনয়শিল্পের জন্য ২০১৮ সালে একুশে পদক (মরণোত্তর) লাভ করেছিলেন এই কিংবদন্তি অভিনেতা। ১৯৫২ সালের ২৯ মে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ুন ফরীদি। ২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি এই অভিনেতার মৃত্যু হয়।
You must be logged in to post a comment.