ডিরেক্টর্স গিল্ড থেকে সাময়িক বরখাস্ত (সাসপেন্ড) হলেন পরিচালক অরিন্দম শীল। শোনা যাচ্ছে, যৌন হেনস্তার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। আর সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নির্মাতাকে পাঠানো হয়েছে নোটিশ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, ই-মেইল মারফত অরিন্দম শীলকে সাময়িক বরখাস্তের নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সদস্য পদ সংখ্যা (১৯৩) উল্লেখ করে জানানো হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ উঠেছে। যার প্রাথমিক প্রমাণ রয়েছে এবং তা অত্যন্ত উদ্বেগের। এমন অভিযোগ সংগঠনের পক্ষে ক্ষতিকর। সেই কারণেই ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিচালককে সাসপেন্ড করা হচ্ছে অথবা যতদিন না পর্যন্ত পরিচালকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হচ্ছে, ততদিন এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।
তবে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অরিন্দম শীল। এ বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানান, বিষয়টি ‘একটি খুনির সন্ধানে’ সিনেমার সেটে হয়েছে। তখন সাহেব চট্টোপাধ্যায় ও অভিযোগকারী অভিনেত্রীকে তিনি একটি ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। তা একটি ‘চিট শট’ ছিল। পরিচালক শট বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন। সেই সময় ‘অ্যাক্সিডেন্টালি’ পরিচালকের মুখ অভিনেত্রীর গালে লেগে যায়। আর সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃতভাবেই হয়েছিল। তখনও এ নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া হয়নি।
পাল্টা অভিযোগ করে অরিন্দম জানান, শুটিং ঠিকঠাক শেষ হয়েছিল। এর অনেক পরে তিনি জানতে পারেন যে অভিযোগকারী অভিনেত্রী তাঁর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ জানিয়েছেন। মহিলা কমিশনেও তিনি গিয়েছিলেন। নিজের বক্তব্য জানিয়েছিলেন। সেই সময় তাঁকে লিখিত দিতে বলা হয়েছিল।
পরিচালক জানান, অনিচ্ছাকৃতভাবেই যে ঘটনা ঘটেছে তা তিনি লিখিতভাবেই দিতে যাচ্ছিলেন। তাতে অভিনেত্রী রাজি ছিলেন না। তখন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের অনুরোধে তিনি অনিচ্ছাকৃত শব্দটি বাদ দেন। সেটিই এখন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে। পরিচালক জানান, বিষয়টি আইনজীবীদের সঙ্গে তিনি আলোচনা করবেন। তারপর সিদ্ধান্ত নেবেন। প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছরে বিভিন্ন সময়ে একাধিক অভিনেত্রী অরিন্দমের বিরুদ্ধে হেনস্তার অভিযোগ এনেছেন। যদিও প্রতিবারই পরিচালক তাঁদের অভিযোগ মিথ্যা বলেই দাবি করেছেন।
এদিকে, অরিন্দমের বরখাস্তের খবর প্রকাশ্যে আসতেই সামাজিক মাধ্যমে মুখ খুলেছেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। তিনি লেখেন, ‘পাপের ঘড়া উল্টোয়। ভেবেছিলাম বোধহয় নিজের জীবনে দেখে যেতে পারব না। ভগবান তুমি এই কথাটুকু যে রেখেছ, এই অনেক। ২০ বছর সময় লাগল, সে লাগুক। আমাদের জগতের সমস্ত মেয়েদের বলছি। সময় এসেছে, সম্মান দখল করার। আর ভয় নয়। গলা তুলে, আঙুল তুলে চিৎকার করে নোংরা লোকগুলোর মুখোশ টেনে ছিঁড়তে হবে। সবাই বেরিয়ে এসো। হাত ধরে একসঙ্গে সরব হই। এটা আমাদের ন্যায্য অধিকার।’
You must be logged in to post a comment.