দুর্দান্ত, দুর্ধর্ষ, অদমনীয়, তেজদীপ্ত, কী নামে বিশেষায়িত করা হয়নি তাকে। নামের মতো পারফরম্যান্সেও ছিলেন জাজ্বল্যমান। এতো নামে বিষেশায়িত এমবাপে কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে এক পরাজিত সৈনিক। আর এই পরাজয়ের পরও তিনি গড়েছেন বিশাল একটি রেকর্ড। বিশ্বকাপ ফাইনালের ইতিহাসে হ্যাটট্রিক করার পরও ম্যাচ হেরেছে এমন রেকর্ড আর কারও নেই।
আর্জেন্টিনার কাছে হেরে বিশ্বকাপ জেতা না হলেও ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে গোল্ডেন বুট জিতে নিয়েছেন ফ্রান্সের কিলিয়ান এমবাপ্পে। চরম নাটকীয় ফাইনাল ম্যাচে হ্যাটট্রিক করে মেসিকে পেছনে ফেলে গোল্ডেন বুট নিজের করেন নেন তিনি। ৭ গোল করেও গোল্ডেন বুট নিজের করে নিতে ব্যর্থ হন মেসি।
রোববার (১৮ ডিসেম্বর) মেসি এবং এমবাপ্পে দুইজনেই ফাইনাল খেলতে নেমেছিলেন ৫ গোল নিয়ে। ম্যাচের শুরুতেই পেনাল্টি থেকে গোল করে নিজের গোল সংখ্যা বাড়িয়ে নেন ৬টিতে। দ্বিতীয়ার্ধে এক মিনিটের ব্যবধানে জোড়া গোল করে মেসিকে টপকে ৭ গোলের মালিক হয়ে যান এমবাপ্পে।
খেলার অতিরিক্ত সময়ে লিওনেল মেসি আবারও অসাধারণ এক গোল করে ছুঁয়ে ফেলেন এমবাপ্পেকে। তবে খেলার অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয় অংশে আবারও পেনাল্টি থেকে এমবাপ্পে গোল করলে মেসিকে টপকে ৮ গোলের মালিক হয়ে গোল্ডেন বুট নিজের করে নেন তিনি।
৩-৩ গোলে সমতায় শেষ হওয়া ম্যাচে আর্জেন্টিনার হয়ে দুটি গোল করেন মেসি। আর বাকিটা আসে ডি মারিয়ার পা থেকে। কিন্তু ফ্রান্সের হয়ে ৩টি গোলই করেন এমবাপে। যাকে কিলিয়েন এমবাপে থেকে কিলার এমবাপে হিসেবেও অভিহিত করা হচ্ছিল। কিন্তু ভাগ্যের কাছে হেরে পরাজিত সৈনিক বনে গেছেন এই তরুণ তুর্কি।
এর আগে ফুটবল বিশ্বকাপের ইতিহাসে ফাইনাল ম্যাচে একবার মাত্র হ্যাটট্রিক হয়েছিল ১৯৬৬ সালে। সেবার স্যার জিওফ হার্স্টের হ্যাটট্রিকে জার্মানীকে ৪-২ হারিয়ে শিরোপা উৎসব করেছিল ইংল্যান্ড। ওই একবারের পর আর কখনো কাপ জেতেনি ইংলিশরা।
আর আজকের ম্যাচে ৮০, ৮১ ও ১১৮ মিনিটে তিনটি গোল করে হ্যাটট্রিক করেন এমবাপে। ওই হ্যাটট্রিকে বারবার রং বদলায় ম্যাচের। দুটি গোল আসে পেনাল্টি থেকে। বাকিটা ছিল চমৎকার দর্শনীয় একটি গোল।
আর ৪৬ বছর পর ফুটবল বিশ্বকাপের ফাইনাল হ্যাটট্রিক দেখলো। সেই সঙ্গে হ্যাটট্রিক করা সৈনিককে পরাজিত হতেও দেখলো। মাথা নুইয়ে মাঠ ছেড়েছেন এমবাপে। যখন মাঠ ছাড়ছিলেন, তখন হয়তো মনে মনে বলছিলেন, টাইব্রেকারে সতীর্থরা যদি একটু ভালো করতো…
You must be logged in to post a comment.