জয়া আহসান ও মিথিলায় বুঁদ হয়ে রয়েছে ভারতীয় বাংলা সিনেমা জগত। এপার বাংলার চলচ্চিত্র নিয়েও তাদের আগ্রহের শেষ নেই। বিশেষ করে কারাগার, হাওয়া ও কারাগার পার্ট-২ নিয়ে ব্যাপক হইচই চলছে কলকাতায়। এক্ষেত্রে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে গেছেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। গুণী এই অভিনেতা এবার অভিনয় করবেন ওপার বাংলার চলচ্চিত্রে।

বিখ্যাত পরিচালক মৃণাল সেনের বায়োপিকে নামভূমিকায় অভিনয় করবেন চঞ্চল চৌধুরী। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সিনেমায় অবশ্য মৃণালের ব্যক্তিগত এবং পরিচালনার জীবনই বেশি থাকবে। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৩ সময়কালে তার বানানো কলকাতা ট্রিলজি ছবির অনেকটা জুড়ে থাকবে। ছবিতে থাকবেন মনামী ঘোষ এবং সম্রাট চক্রবর্তীও। ছবিটির প্রযোজক ফিরদৌসুল হাসান।

বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) মৃণালের মৃত্যুবার্ষিকী ছিল। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর প্রয়াত হয়েছিলেন তিনি। তার চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকীতে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে ওই ছবির শুটিং শুরু করবেন পরিচালক সৃজিত। তিনি বলেন, ‘বায়োপিক বা ওই ধাঁচের ছবি আগেও করেছি। যেমন শাবাশ মিঠু বা ভাওয়াল সন্ন্যাসীকে নিয়ে। কিন্তু নিঃসন্দেহে এটা সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং!’

মৃণালের ভূমিকায় চঞ্চলকে নেওয়া নিঃসন্দেহে বড় পদক্ষেপ। সপ্তাহখানেক আগে বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। কেন চঞ্চল? সৃজিতের কথায়, “প্রথমত দু’জনের মুখের মিল আছে। সেটা কাকতালীয়। কিন্তু মৃণালবাবুর মতোই চঞ্চলের চোখের দৃষ্টি অত্যন্ত ধারালো এবং সজাগ। তা ছাড়াও মৃণালবাবুর রাজনীতি চেতনা, তার যাপন এবং দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গেও চঞ্চলের প্রচুর মিল। সেটা কাকতালীয় হতে পারে। কিন্তু মিলটা আছে।’’

মৃণাল জন্মেছিলেন ১৯২৩ সালের ১৪ মে। তিনি ছবি বানিয়েছিন বাংলা, হিন্দি এবং তেলুগুতে। তার নাম পরিচালক হিসাবে বাংলার সর্বকালীন সেরাদের মধ্যে অন্যতম বলে পরিগণিত হয়। ‘পদ্মভূষণ’ থেকে ‘দাদাসাহেব ফালকে’— সবই রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। ভুবন সোম, মৃগয়া, আকালের সন্ধানে, খারিজ, পদাতিক, একদিন প্রতিদিন— এ সবই তাঁর অন্যতম সৃষ্টি। পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও। ১৯৫৫ সালে ‘রাতভোর’ থেকে ২০০২ সালের ‘আমার ভুবন’— মাঝে রয়েছে মৃণালের অসংখ্য সিনেমা।

সেই মৃণালের জীবনীচিত্রে তার ভূমিকায় অভিনয় করবেন চঞ্চল। সম্প্রতি যার দু’পর্বের ‘কারাগার’, ‘তকদির’-এর মতো ওয়েব সিরিজ এবং ‘হাওয়া’র মতো ছবি পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দর্শকের প্রশংসা পেয়েছে। সম্প্রতি চঞ্চলের পিতৃবিয়োগ হয়েছে। আপাতত তিনি বাংলাদেশে আছেন। শুটিং শুরুর আগে কলকাতায় পৌঁছবেন।