এক যে ছিল সময়। যেকোনো রূপকথার গল্পের মতোই ভারতীয় ফুটবলেও একটা এমন সময় ছিল। যখন জাপান থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দলকে হারিয়ে দিতে পারত ভারত! ভারতীয় ক্রিকেটে যেমন ১৯৮৩, তেমনি ফুটবলে একটা বছর ১৯৬২। যেবার জাকার্তায় এশিয়ান গেমসে সোনা জিতেছিলেন পিকে-চুনী-বলরাম-জার্নেল সিংরা। আর তাদের কোচ ছিলেন সৈয়দ আবদুল রহিম। সেই অসামান্য সাফল্যই এবার রুপালি পর্দায় ফুটে উঠেছে ‘ময়দান’ নামে।
এর আগেও বহুবার সিনেমার পর্দায় ফুটে উঠেছে বিভিন্ন খেলোয়াড়ের জীবনী। এই কারণেই অতীতে ‘চক দে ইন্ডিয়া’,’ভাগ মিলখা ভাগ’, ‘মেরি কম’,’দঙ্গল’ , এবং ‘পাঙ্গা’ এর মতো ছবি দর্শকদের ভালোবাসা পেয়েছে।
এই ছবিতে অভিনয়শিল্পীদের পারফরম্যান্স, ১৯৫০-৬০-এর কলকাতাকে বিশ্বাসযোগ্যভাবে পর্দায় তুলে ধরা, সিনেমাটোগ্রাফির প্রশংসা করেছেন সমালোচকেরা। অন্য অনেক হিন্দি বায়োপিকের মতো এটিতে অতি বাণিজ্যিকীকরণ করার চেষ্টা না করে, গল্পকে বাস্তবসম্মতভাবে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। এ জন্য বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছেন নির্মাতা।
অমিত শর্মার নির্দেশনার বিশেষত্ব হল ফুটবল কোচ সৈয়দ আবদুল রহিমের জীবনী তুলে ধরা। চলচ্চিত্রের প্রথমার্ধে, চরিত্র এবং গল্প প্রতিষ্ঠায় সময় ব্যয় হলেও, দ্বিতীয়ার্ধে দর্শকের আগ্রহ বাড়ে এবং শেষ ২০ মিনিটে দর্শক চোখের পলক ফেলতে পারেনি।
চারবারের জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী অজয় দেবগন এবারও সূর্যের মতো জ্বলছেন সৈয়দ আবদুল রহিমের চরিত্রে। ‘সিংহম’-এর একেবারে বিপরীত তিনি শান্ত, সংযত এবং মর্যাদাপূর্ণ চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয় দিয়ে অনেক দৃশ্য ফুটিয়ে তুলেছেন। তার সিগারেট খাওয়ার স্টাইল চরিত্রটিকে আরও শক্তিশালী করে তোলে। সায়রা চরিত্রে প্রিয়মণি খুব সুন্দরভাবে অভিনয় করেছেন। গজরাজ রাও তার অভিনয় শৈলী দিয়ে একজন নেগেটিভ ক্রীড়া সাংবাদিকের চরিত্র ফুটিয়ে তোলেন।
নির্মাতা অমিত রবীন্দ্রনাথ শর্মার আগের সিনেমা ছিল ‘বাধাই হো’। সেই সিনেমাটি দর্শক-সমালোচকের প্রশংসা কুড়িয়েছিল। কমেডি ঘরানার ছবি থেকে বেরিয়ে এসে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধারার ছবি বানিয়ে নিজের কাজের বৈচিত্র্যের প্রমাণ দিলেন নির্মাতা।
You must be logged in to post a comment.