দেশের বর্ষীয়ান চলচ্চিত্র অভিনেতা প্রবীর মিত্র। ৬০’র দশক থেকে তিনি অভিনয় করে আসছেন। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে প্রবীর মিত্র ‘নায়ক’ হিসেবে কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। এরপর ‘চরিত্রাভিনেতা’ হিসেবে কাজ করেও তিনি পেয়েছেন দর্শকপ্রিয়তা।
৮১ বছর বয়সী এই অভিনেতা এখন বার্ধ্যক্যে উপনিত। আগের মত আর হাঁটাচলা করতে পারেন না। তার দিন কাটছে ঘরে হুইল চেয়ারে বসে কিংবা বিছানায় শুয়ে।
প্রায় চার শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেন প্রবীর মিত্র। গত কয়েক বছর ধরে হাঁটুর সমস্যায় পড়েছেন তিনি। মাস ছয়েক আগে ভারতে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন অস্টিওপরোসিসে রোগের। এখন সপ্তাহে তার তিনবার কেমো দেয়া লাগে। নীরবে নিভৃতে ও একাকিত্বে ধানমন্ডিতে ছেলের বাসায় দিন কাটাচ্ছেন নবাব সিরাজউদ্দৌলা খ্যাত এ অভিনেতা।
তার দিনের বেশিরভাগ সময় কাটে টিভি দেখে। ঘরবন্দী থাকলেও মন পড়ে থাকে এফডিসি ও শুটিংয়ে। প্রবীর মিত্রের ছেলে মিথুন মিত্র জানান, তার বাবার শ্রবণ শক্তি দিনদিন হ্রাস পাচ্ছে। সে কারণে তিনি ঠিকমত কানে শুনতে পান না। উচ্চস্বরে কথা বললে উত্তর দিতে পারেন। তবে তিনি ঠিকমত খাওয়াদাওয়া করতে পারেন।
প্রবীর মিত্র বলেন, মনে হয় হাজার বছর অভিনয় করি না। খুব মন চায় অভিনয় করি। এফডিসি যাই, আবার আড্ডা দেই পরিচিত মানুষজনের সঙ্গে। এফডিসি যাওয়ার জন্য আমার মন ছটফট করে। আমার স্ত্রী বেঁচে নেই প্রায় ২০ বছর হলো। তার না থাকাও খুব মিস করি।
জীবনের বেশির ভাগ সময় চলচ্চিত্রের পেছনে ব্যয় করলেও তেমন কেউই এখন খোঁজ নেয় না প্রবীর মিত্র’র। খানিক খারাপ লাগলেও এ নিয়ে আক্ষেপ নেই অভিনেতার। তিনি বলেন, সবাই সবার কাজে ব্যস্ত। তারপরও আমার সঙ্গে যদি চলচ্চিত্রের সহকর্মীরা দেখা করতে আসেন ভীষণ ভালো লাগবে।
প্রবীর মিত্র জানান, তার শরীরের যে অবস্থায় এতে আর সিনেমায় কাজ করার মত পরিস্থিতি নেই। তিনি বলেন, আদৌ আর কাজ করতে পারব কিনা জানি না। দিনরাত বাসায় থাকি। এ ঘর থেকে ও ঘরে হুইল চেয়ারে করে।
স্কুলজীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে অভিনয় করেছিলেন প্রবীর মিত্র। পরবর্তীতে পরিচালক এইচ আকবরের হাত ধরে ‘জলছবি’ নামে একটি চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়েছে বড়পর্দায় তার অভিষেক হয়। মূলত এ ছবিতে কাজের ব্যাপারে তার বন্ধু এটিএম শামসুজ্জামানই তাকে সহযোগিতা করেছিলেন। ১৯৪০ সালে পুরনো ঢাকায় জন্মগ্রহণকারী প্রবীর মিত্র স্কুলজীবন থেকেই নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত হন।
You must be logged in to post a comment.