নির্মাতা কাজল আরিফিন অমির ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’-এর কয়েকটি পর্ব ইতোমধ্যে ইউটিউব থেকে সরানো হয়েছে। আলোচিত ধারাবাহিক এই নাটকটি ধ্রুব টিভি নামের ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার হয়ে থাকে। আপাতত নাটকটির চতুর্থ সিজন চলছে। সম্প্রতি আলোচিত নাটকটির কিছু পর্বের সংলাপ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। যেসব সংলাপকে ‘নোংরা’ ও ‘অশ্লীল’ বলে মন্তব্য করছেন নেটিজেনরা। তবে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন নির্মাতা কাজল আরিফিন অমি।
নাটকটির আপত্তিকর সংলাপ ‘যৌনকর্মীর ছেলে’ বাক্যের বিষয়ে অমি জানিয়েছেন, যৌনকর্মীর ছেলে সংলাপটি নিয়ে দ্বিমত ছিল অনেকের। আমার পয়েন্ট হচ্ছে, আমরা কিন্তু ‘খা… ছেলে’, ‘মা.. ছেলে’ (শব্দটি প্রকাশযোগ্য নয়) এমন শব্দ বাস্তব জীবনে ব্যবহার করে থাকি। দেশের নাটক-সিনেমায়ও এসব শব্দ ব্যবহার হয়। সেখানে ‘খা… ছেলে’র পরিবর্তে ‘যৌনকর্মীর ছেলে’ শব্দটি ব্যবহার করেছি আমি। শব্দটি একটি শ্রেণিকে বোঝায়। যৌনকর্মী বলা তাদের জন্য তো স্বীকৃতি। তবে তাদের যদি ‘খা..’ বলি তাহলে সেটা অবশ্যই তারা পছন্দ করবে না। এমনকি ‘খা…..-মা…’ গালিগুলো দেয়া উচিত নয়। তারপরও চরিত্রের প্রয়োজনে বা নেগেটিভিটি বোঝানোর জন্য অনেক সময় মদ খাওয়া, ধর্ষণ, সিগারেট খাওয়া, মিথ্যা বলা, চুরি করি কিংবা গালি ব্যবহার করি। সেদিক থেকেই ব্যবহার করেছি শব্দটি।
মুষ্টিমেয় গ্রুপ বিষয়টি নিয়ে সক্রিয় ছিল জানিয়ে এই অমি জানান, বিষয়টি নিয়ে যারা নেতিবাচক মন্তব্য করেছে, খেয়াল করে দেখেছি, একটাই লেখা বিভিন্ন পেজে পোস্ট করা হয়েছে। একটি মুষ্টিমেয় গ্রুপ যারা ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ পছন্দ করে না তারাই লেখাটি বিভিন্ন পেজে পোস্ট করেছে। সংলাপটি মিউট করার জন্য আপাতত ওই পর্বগুলো প্রাইভেট করা হয়েছে। আপাতত যারা ব্যাচেলর পয়েন্টকে অপছন্দ করছে বা ঘৃণা করছে, তাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে কাজটি করা।
অমির ভাষায়, যারা ব্যাচেলর পয়েন্টের আসল দর্শক তারা কিন্তু সংলাপটি পছন্দ করেছে। বিভিন্ন পোস্টে যারা নেগেটিভ মন্তব্য করেছেন সেখানে গিয়ে তারা এর পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। সেই জায়গা থেকে আমি চাইলে সংলাপটি রেখে দিতেও পারতাম। কিন্তু তা করিনি। কেননা, যারা সংলাপটি পছন্দ করছেন না তারাও আমার দর্শক। তাদের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত কোনো শত্রুতা নেই। নাটকটি দেখছেন বলেই নেগেটিভ বিষয়গুলো চোখে পড়েছে তাদের।
ব্যাচেলর পয়েন্ট বাস্তবজীবন থেকে নির্মাণ করেন জানিয়ে তিনি আরও জানান, ব্যাচেলর পয়েন্ট আমি আকাশ থেকে বানাই না। সমাজ থেকেই বানাই। এ কারণে আমরা যা করি তাই দেখানো হয়। বাস্তবজীবনে কিন্তু কারণে-অকারণে এর থেকেও বেশি গালি ব্যবহার করি। তার ফিফটি পারসেন্ট হয়তো দেখাতে পারি নাটকে। এখন কিন্তু বাংলাদেশে ওটিটিতে গালি ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনো বিপি দেয়া হয় না। সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া সিনেমায়ও গালি রয়েছে। তা কিন্তু পরিবার নিয়ে দেখেছে মানুষ। আর ব্যাচেলর পয়েন্টের শুরুতেই ডিসক্লেইমার দিচ্ছি আমরা। এটা অ্যাডাল্ট কনটেন্ট। বাচ্চাদের জন্য না।
অমি আরও জানান, এরপরও দর্শকের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আরও সতর্ক থাকবো আমি। আরও বেশি বিপি ব্যবহার করব। দর্শকের ভালোবাসা নিয়েই নাটকটি এগিয়ে যাবে নিজস্ব গতিতে।
প্রসঙ্গত, নাটকটির অন্যতম প্রধান চরিত্র পাশা। এই চরিত্রে অভিনয় করেছেন মারজুক রাসেল। নাটকে তার একটি সংলাপ ঘিরেই সমালোচনার সূত্রপাত। তারপর পুরো নাটকে বিভিন্ন সংলাপে ব্যবহৃত গালি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। এসব অশ্লীল সংলাপ সমাজে বিরূপ প্রভাব ফেলছে, এমন অভিযোগ তুলে নাটকটি বয়কটের ডাক দেন নেটিজেনদের একাংশ।
You must be logged in to post a comment.