ঢাকাই সিনেমার মহানায়ক বুলবুল আহমেদ। আজ (১৫ জুলাই) এই অভিনেতার ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। অভিনয়ের সব শাখায় সফল বিচরণ করা এই তারকা দু’শরও বেশি ছবিতে কাজ করেছেন, পরিচালনায় রেখেছেন মুন্সিয়ানার স্বাক্ষর। দেশীয় চলচ্চিত্র ও নাট্যাঙ্গনের ডাকসাইটে অভিনেতা, পরিচালক ও প্রযোজকের চলে যাওয়ার দিনে দেখে নেওয়া যাক জানা-অজানা পাঁচ তথ্য—
নাট্যগোষ্ঠী তৈরি
অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা থেকে একসময় ঢাকার কয়েকজন বন্ধু মিলে ‘শ্যামলী শিল্পী সংঘ’ নামে একটি নাট্যগোষ্ঠী গঠন করেছিলেন বুলবুল আহমেদ। নীহার রঞ্জন গুপ্তের ‘উল্কা’ নাটকটি মঞ্চস্থ করার মধ্য দিয়ে এই সংঘের যাত্রা শুরু হয়েছিল।
প্রথম চলচ্চিত্র
১৯৭৩ সালে আবদুল্লাহ ইউসুফ ইমামের (ইউসুফ জহির) ‘ইয়ে করে বিয়ে’র মাধ্যমে সিনেমায় অভিষেক হয় বুলবুল আহমেদের। ঢাকাই ছবির দর্শকের কাছে চিরস্মরণীয় তিনি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অমর সৃষ্টি দুই চরিত্র ‘শ্রীকান্ত’ ও ‘দেবদাস’ দুর্দান্ত রূপদান করার জন্য। ‘রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত’ ও ‘দেবদাস’—এই দুটি চলচ্চিত্র দিয়ে তিনি জায়গা করে নিয়েছিলেন সকল শ্রেণির দর্শকের অন্তরে।
তাবাররুক আহমেদ থেকে বুলবুল
বুলবুল আহমেদের আসল নাম তাবাররুক আহমেদ। মা-বাবা তাকে ডাকতেন ‘বুলবুল’ বলে।
টেলিভিশন নাটক ‘এপিঠ ওপিঠ’-এর চলচ্চিত্ররূপ ছিল ‘ইয়ে করে বিয়ে’। সেটাতে অভিনয় করতে গিয়েই নাম পাল্টাতে হয়। রুপালি পর্দায় প্রবেশের সময় শিষ্যের নাম বদলে মায়ের দেওয়া ‘বুলবুল’ রাখেন পরিচালক আবদুল্লাহ ইউসুফ ইমাম।
ব্যাংকার থেকে নায়ক
লেখাপড়ায় বরাবরই মনোযোগী ছিলেন অভিনেতা।পড়েছেন ঢাকার ঐতিহ্যবাহী কলেজিয়েট স্কুলে। এখান থেকে এসএসসি পাস করে নটরডেম কলেজে ভর্তি হন। পড়েছেন সিলেটের এমসি কলেজেও। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর করে ১৯৬৫ সালে ব্যাংকের চাকরিতে যোগ দেন। চাকরি জীবন শুরু করেন তৎকালীন ইউবিএল ব্যাংক টিএসসি শাখার ম্যানেজার হিসেবে। শাখা প্রধান হিসেবে টানা ১০ বছর চাকরি করেছেন। সিলেট এমসি কলেজে থাকাকালে মঞ্চনাটক চিরকুমার সভায় কেন্দ্রীয় ভূমিকায় অভিনয় করে উপস্থিত সবার নজর কাড়েন। শখের অভিনয়, নেশা থেকে পেশায় পরিণত হতে বেশি সময় লাগেনি। ১০ বছরের ব্যাংকিং পেশা ছেড়ে দিয়ে অভিনয়ে নেমে পড়েন বুলবুল আহমেদ।
সাদামাটা জীবন
আশির দশকের মাঝামাঝি। সে সময়টা বাংলা চলচ্চিত্রের সোনালি যুগ। একটার পর একটা হিট ছবি, একাধিক নায়কের জয়জয়কার। বুলবুল আহমেদ থাকতেন ঢাকার হাটখোলা রোডের এক বাসায়। সেখানে আর দশটি পরিবারের মতোই সাধারণ মানুষের সঙ্গে তার চলাফেরা ছিল। এমনকি এলাকার টং দোকানেও তাকে নিয়মিত যেতে দেখা যেত। মাঝে মধ্যে সেখান থেকে পান, চা পান করতেন।
You must be logged in to post a comment.