জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর-৪৭ তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে এটিএন বাংলায় আজ (১৫ আগস্ট ২০২২) রাত ৮.৪৫ প্রচার হবে বিশেষ নাটক ‘একজন কফিলুদ্দিন’। ‘মহামানবের দেশে” গল্প অবলম্বনে নির্মিত কাহিনিচিত্রটি রচনা করেছেন সহিদ রাহমান। নাট্যরূপ দিয়েছেন বিদ্যুৎ রায় এবং পরিচালনায় সুমন ধর। কাহিনিচিত্রে বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করেছেন দু-বাংলার খ্যাতিমান কথা-সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, আরো অভিনয় করেছেন গাজী রাকায়েত, আহমেদ রুবেল, রোকেয়া প্রাচী প্রমুখ।
নাটকের গল্প আবর্তিত হয়েছে এভাবে- ছোটবগী ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সত্তরোর্ধ্ব কফিলুদ্দিন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে ২৬ বছর ধরে খালি পায়ে, কালো-কাপড় পরিধান করে ও কোন প্রাণীর মাংস না খেয়ে জীবন যাপন করছেন। বঙ্গবন্ধুর প্রতি তার এমন শ্রদ্ধা, ভালোবাসা আর শোক পালন মানুষকে হতবাক করে। ফলে গ্রামের মানুষ তাকে মুজিব পাগল নামে ডাকে। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয় সে। পরিবার পরিজনের মায়া ত্যাগ করে যুদ্ধে গিয়েছিলেন কফিলুদ্দিন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের প্রতি ছিল তার অগাধ বিশ্বাস। যুদ্ধ শেষে গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মিজানের কাছে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর সাক্ষাত লাভের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। কমান্ডার জানান, ঢাকাতে নিয়ে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর সাক্ষাত প্রাপ্তির বিষয়টি জটিল ও অনিশ্চিত। তবে কমান্ডার আশান্বিত করে বঙ্গবন্ধু আমতলীতে এক জনসভায় আসবেন। তাকে সেখানে নিয়ে গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে দূর থেকে দেখার সুযোগ করে দিবেন। পরবর্তীতে কমান্ডারের কাছ থেকে খবর পেয়ে ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল জেলা হয়ে ৩৫ কিলোমিটার পথ হেঁটে কফিলুদ্দিন সেখানে যান। ততক্ষণে বঙ্গবন্ধু আমতলীর জনসভা শেষ করে ঢাকার উদ্যেশে চলে যান। অল্প সময়ের জন্য বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার দেখা হয়নি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে এক নজর দেখার হাল ছাড়েননি কফিলুদ্দিন। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট চরপাড়া গ্রামে চায়ের দোকানে বসে রেডিওতে মেজর ডালিমের কন্ঠে শুনতে পারেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে খুনি ঘাতকরা হত্যা করেছে। স্বাক্ষর জ্ঞানহীন কফিলুদ্দিন শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েন।
কফিলুদ্দিন খুনি ঘাতকদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ স্বরূপ ঐ সময় থেকেই প্রতিজ্ঞা করে আমৃত্যু খালি পায়ে, গায়ে কালো-কাপড় পরে ও মাংস না খেয়ে জীবন যাপন শুরু করেন এবং বিনিময়ে কিছুই চাননি। কফিলুদ্দিন বলেন, আমি নেতাদের কাছে কিছুই চাই নাই। আমার শেষ ইচ্ছা আমি বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে একটু দেখা করবো। তার এলাকার সংসদ-সদস্য ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বান্ধবী লেখিকাকে অনুরোধ করেন তার জীবনের শেষ চাওয়াটা পুরন করবার জন্য। তাঁরা তাকে কথা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করাবেন।
You must be logged in to post a comment.