অবরুদ্ধ গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বোমা হামলার পেছনে কোন বৈধতা ও ন্যায্যতা থাকতে পারে না। সেখানে খাবার, পানি, ওষুধের তীব্র সঙ্কট দেখা গেছে। মৌলিক অধিকার বলে কিছু নেই। আশ্রয় নেওয়ার জন্য সীমান্ত পার হবে তাও সম্ভব হচ্ছে না। শিশুদের হত্যা করা হয়েছে এবং অনেক শিশু এখন বাবা-মা হারা হয়ে গেছে। ফিলিস্তিনিদের পক্ষ নিয়ে এমন মন্তব্য করেছেন অস্কারজয়ী অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে দেয়া পোস্টে অবিলম্বে তিনি গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাসসহ বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর ইসরায়েলের মূলভূখণ্ডে হামলার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে যা ঘটেছে তা সন্ত্রাসী হামলা। কিন্তু এর জেরে অবরুদ্ধ গাজায় বেসামরিক জনগণের ওপর বোমাবর্ষণ ন্যায্যতা পায় না। গাজাবাসীদের খাবার, পানি, ওষুধ নেই। যুদ্ধ আরও তীব্রতর হলেও সেখান থেকে তাদের সরিয়ে নেওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। সেখানে বাসিন্দাদের মৌলিক অধিকারও নেই। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে তাদের সীমান্ত পার হতে হবে, সেটাও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।’
অ্যাঞ্জেলিনা জোলি আরও বলেন, ‘গাজায় শিশুদের হত্যা করা হয়েছে এবং অনেক শিশু এখন বাবা-মা হারা হয়ে গেছে। অবিলম্বে আটককৃত ও জিম্মিদের মুক্তি দেয়া প্রয়োজন। স্বজন হারাদের অকল্পনীয় যন্ত্রণা ও তাদের পরিবারের জন্য প্রার্থনা করছি।’
অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বাহিনীর ভয়াবহ হামলায় গত ২২ দিনে নিহত হয়েছেন আট হাজার ৩০৬ ফিলিস্তিনি। এদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। আজ সোমবার (৩০ অক্টোবর) এ তথ্য জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সর্বাত্মক অবরোধের মুখে থাকা গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা আট হাজার ৩০৬ জনে পৌঁছেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে শিশু রয়েছে তিন হাজার ৪৫৭টি আর নারীর সংখ্যা দুই হাজার ২৩৬ জন। এখনো বহু মানুষ ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়ে বা নিখোঁজ রয়েছেন। গত ৭ অক্টোবর বর্বরোচিত এই হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে রোববার (২৯ অক্টোবর) পর্যন্ত ২১ হাজার ৪৮ ফিলিস্তিনি নাগরিক আহত হয়েছেন।
এদিকে, গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় চিকিৎসকসহ ১২৪ স্বাস্থ্যকর্মী নিহত হয়েছেন। সোমবার (৩০ অক্টোবর) এমনটি জানিয়েছেন, গাজায় ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদ্রসা। তিনি আরও জানিয়েছেন, গত ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর জ্বালানি সঙ্কটে ২৫টি অ্যাম্বুলেন্স অচল হয়ে পড়েছে এবং ৩২টি মেডিকেল সেন্টারও পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেছে।
You must be logged in to post a comment.