চিত্রনায়ক ফারুকের মৃত্যুর খবরে কান্না চেপে রাখতে পারেননি তার দীর্ঘদিনের সহকর্মী সহশিল্পী চিত্রনায়িকা রোজিনা। মৃত্যুর খবরে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘শুধু আমার নায়ক নন, ফারুক ভাই ছিলেন আমাদের চলচ্চিত্রের অভিভাবক। আজ সকালে যখন তার চিরবিদায়ের খবরটি পেলাম কান্না চেপে রাখতে পারিনি। বুকের ভেতর হাহাকার করে উঠল। মনে হচ্ছে পৃথিবীটা শূন্যতায় ভরে গেল।’
সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় তার মৃত্য হয়েছে। তার বয়স হয়েছিল প্রায় ৭৫ বছর।
ঢাকাই সিনেমার ‘মিয়া ভাই’ খ্যাত এই নায়কের বিপরীতে একাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন রোজিনা। এর মধ্যে রয়েছে- ‘হাসু আমার হাসু’, ‘মান অভিমান’, ‘সাহেব’ ‘সুখের সংসার’, ‘শেষ পরিচয়’সহ অনেক সিনেমা।
ফারুককে নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে রোজিনা বলেন, ‘নায়ক বলি বা সহশিল্পী বলি, ফারুক ভাই সাংঘাতিক রকমের একজন কর্মঠ মানুষ। মুখের উপর সত্য কথাটা বলে দিতে পারতেন। এমন স্বভাবের মানুষ খুব কমই দেখেছি। চলচ্চিত্রের দুর্দিনে তিনিই তো হুংকার দিয়ে এফডিসিতে এগিয়ে এলেন। সবাইকে এক করে নতুন করে কাজের উদ্যম দিলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ফারুক ভাই সিঙ্গাপুরে চিকিৎসারত ছিলেন। তবুও মনে হত তিনি আমাদের পাশে আছেন, কিন্তু এখন তো চিরতরে চলে গেলেন। চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি শক্তিমান এক অভিভাবক হারাল। এমন বলিষ্ঠ অভিভাবক আর আসবে না। যেখানেই থাকুন ভালো থাকুন ফারুক ভাই।’
১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট ঢাকায় জন্ম ফারুকের। ১৯৭১ সালে ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে ফারুকের চলচ্চিত্রে অভিষেক। তিনি ‘লাঠিয়াল’, ‘সুজন সখী’, ‘নয়নমনি’, ‘সারেং বৌ’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সাহেব’, ‘আলোর মিছিল’, ‘দিন যায় কথা থাকে’, ‘মিয়া ভাই’সহ শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।
লাঠিয়াল চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য ফারুক ১৯৭৫ সালে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। ২০১৬ সালে তিনি আজীবন সম্মাননা অর্জন করেন।
You must be logged in to post a comment.