পর্তুগালকে হারিয়ে কাতারে মরক্কোর রূপকথা অব্যাহত রইলো। সেই সঙ্গে প্রথম আফ্রিকান দেশ হিসেবে সেমিফাইনালে যাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করল তারা। অথচ এই মরক্কোকে নিয়ে কেউই স্বপ্ন দেখেনি। আফ্রিকার একমাত্র দেশ হিসেবে এখনো টিকে রইলো অ্যাটলাস লায়নরা।
শেষ ষোলোতে সুইজারল্যান্ডের ম্যাচের পর টানা দ্বিতীয় ম্যাচে মরক্কোর বিপক্ষে এদিন সাইডবেঞ্চে বসেছিলেন বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। সাইডবেঞ্চ থেকে বসে বসে দেখলেন দলের গোল খাওয়া। বিরতির পরে নামলেও কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পাননি। যার ফলে প্রথমার্ধের ওই এক গোলেই হার দেখতে হয় পর্তুগালকে।
পর্তুগালের বিদায়ের ফলে কাতার থেকে নেইমারের পর খসে পড়ল রোনালদো নামক আরেকটি তারা। এখনো টিকে রইলো এমবাপ্পে ও লিওনেল মেসি। এমবাপ্পে সেমিতে যাবেন কিনা তা জানা যাবে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচেই। কিন্তু লিওনেল মেসি ইতোমধ্যে দলকে নিয়ে চলে গেছেন সেমিফাইনালে। যেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছেন আগের আসরের রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়াকে।
গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের প্রথমার্ধের ৪২ মিনিটে লিড নেয় মরক্কো। সেভিয়ায় খেলা দলটির ২৫ বছর বয়সী স্ট্রাইকার ইউসুফ এন নেসিরি হেড থেকে গোল করে দলকে লিড এনে দেন। ওই গোল চেষ্টা করেও শোধ করতে পারেনি তরুণ-সিনিয়র মিলিয়ে দারুণ সম্ভাবনাময় দল নিয়ে কাতারে আসা পর্তুগাল। ওই গোলেই সেমিফাইনালে উঠে গেছে আফ্রিকার প্রতিনিধিরা। বিশ্বকাপের ইতিহাসে আফ্রিকার একমাত্র দল হিসেবে শেষ চারে নাম তুলে ইতিহাস গড়েছে।
সুইসদের বিপক্ষে রোনলদোকে বেঞ্চে রেখে দুর্দান্ত জয় পেয়েছিল পর্তুগাল। সেমিফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়েও একই কাজ করেন পর্তুগিজ কোচ ফার্নান্দো সান্তোস। সিআরসেভেনকে বেঞ্চে রাখেন তিনি। প্রথমার্ধে বলের একচ্ছত্র রাজত্ব করেও ইউরোপের দলটি খুব বেশি সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। এক গোল খেয়ে এবং গোল মুখে তিনটি শট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল তাদের। অবশ্য জোয়াও ফেলিক্স ম্যাচের শুরুতেই গোল হওয়ার মতো ভালো একটি হেড করেছিলেন।
দ্বিতীয়ার্ধের ৫১ মিনিটে বদলি হয়ে মাঠে নামেন ৩৭ বছর বয়সী রোনালদো। ধার বাড়ে পর্তুগালের আক্রমণের। কিন্তু মরক্কোর রক্ষণ দেয়াল ভেঙে গোল করার মতো পরিষ্কার সুযোগ তারা তৈরি করতে পারেনি। রোনালদোদের তাই দুই উইং থেকে ক্রস এবং দূর থেকে শট নিয়ে সমতায় ফেরার চেষ্টা করতে হয়। ওই চেষ্টায় রোনালদো বক্সের ঠিক মুখ থেকে ভালো একটি শট নিয়েছিলেন। বক্সের ঠিক বাহির থেকে বেনার্ড সিলভা নিয়েছিলেন গোল হওয়ার মতো শট। কিন্তু সেভিয়ায় খেলা মরক্কোর গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনোকে তা ফাঁকি দিতে পারেনি।
পর্তুগালের বল পায়ে রাখা, ফাইনালে থার্ডে আক্রমণ শানার ফাঁকে সুযোগের অপেক্ষায় ছিল মরক্কো। তারা গোল করার মতো তিনটি কাউন্টার অ্যাটাকও তুলেছিল। এর মধ্যে শেষ বাঁশির আগে পরিষ্কার গোল করার সুযোগ হারায় তারা। গোলরক্ষকে ফাঁকা পেয়ে জালে বল পাঠাতে পারেনি আফ্রিকার দলটি। এই জয়ে ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে মরক্কো তাকিয়ে থাকবে ফ্রান্স ও ইংল্যান্ড ম্যাচের দিকে। শেষ চারে ওই ম্যাচের জয়ী দলের মুখোমুখি হবে তারা।
You must be logged in to post a comment.