পবিত্র ঈদুল আজহায় মুক্তি তালিকার বহুল প্রতীক্ষিত সিনেমা `তুফান`। টিজার, পোস্টার আর গান দিয়ে ইতোমধ্যে দর্শকের আগ্রহের মধ্যমণি হয়ে উঠেছে সিনেমাটি। সিনেপ্রেমীদের মনে তুমুল আলোড়ন জাগানো তুফান আসছে তুফানের মতো করেই। সিনেমার শেষ মুহূর্তের প্রচারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তুফানের অজানা সব তথ্য তুলে ধরার পাশাপাশি নতুন মাইলফলক গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করলেন সিনেমা সংশ্লিষ্টরা।
‘তুফান’ আসার দিন ঘনিয়ে এসেছে! চারদিকে তার আগমনের ঘনঘটা। শেষ মুহূর্তের প্রচারে শাকিব খান ও রায়হান রাফি ‘তুফান’ টিম নিয়ে রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হলেন বুধবার (১২ জুন)। সেখানে উঠে এলো সিনেমাটির পরিকল্পনা থেকে শুরু করে অসাধারণ মেকিংয়ের গল্প।
সংবাদ সম্মেলনে এদিন উপস্থিত ছিলেন সময়ের আলোচিত গুণী নির্মাতা রায়হান রাফী, ঢালিউড কিং শাকিব খান, নাবিলা, চঞ্চল চৌধুরীসহ `তুফান` সংশ্লিষ্ট কলাকুশলীরা। তাছাড়া এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কলকাতা থেকে বাংলাদেশে এসেছেন টলিউড নায়িকা মিমি চক্রবর্তী।
সংবাদ সম্মেলনে শাকিব খান বলেন, ‘আমি যখন প্রথম তুফানের গল্প শুনি, তখন আসলে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না এটা পর্দায় তুলে ধরা কীভাবে সম্ভব। রাফীকে প্রশ্ন করেছিলাম, ও আমাকে অভয় দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত কী দারুণভাবে সিনেমাটি শেষ করা হয়েছে আমি সত্যি গর্ববোধ করছি রাফীকে নিয়ে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তুফান’ সিনেমাটি একদিকে ক্লাসিক্যাল অন্যদিকে কর্মাশিয়াল। মানুষ এখন ভালো জিনিসের মর্ম বোঝে। হলিউড বলিউড সিনেমার পাশে আমার সিনেমা কেন চলবে? হ্যাঁ চলবে, সিনেমার কোয়ালিটির জন্য। আমি এখন খুব বেছে বেছেই সিনেমা করছি। কারণ দিন শেষে কোয়ালিটিফুল সিনেমাই মানুষ দেখতে চায়। ‘তুফান’ তেমনই একটি সিনেমা। যা দিন দিন বেগবান হচ্ছে। এর গান ও ট্রিজার মুক্তির পর বিশ্বে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। একদিন ইংলিশরাও বাংলা সিনেমা দেখবে।’
রায়হান রাফী ঢাকাই সুপারস্টার শাকিব খান প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি যখন স্ক্রিপ্ট লিখছিলাম তখন প্রতিটা সিনেই আমার চোখের সামনে শাকিব ভাইকেই কল্পনায় আসছিল। সিনেমাটি আসলে শাকিব খান ছাড়া সম্ভব হতো না। আপনারা শাকিব খানকে একেবারেই অন্য লুকে এখানে আবিষ্কার করতে পারবেন। নতুন এক মেগাস্টারকে খুঁজে পাবেন। ‘তুফান’ দেখার পর মনে হবে। একটা মানুষ এতো ভালো অভিনয় কীভাবে করতে পারে।’
সিনেমাটির মেকিং প্রসঙ্গে রাফী আরও বলেন, ‘আমরা সিনেমাটিতে পুরো বাংলাদেশের মেধাবী মানুষদের সংযুক্ত করতে পেরেছি। আপনারা যে ভিজ্যুয়াল দেখবেন একজন বাংলাদেশি মানুষেরই করা। শাকিব খানের অসাধারণ মেকাপ থেকে শুরু করে সবকিছু মেড ইন বাংলাদেশ।`
`তুফান` সিনেমায় গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু ক্যামিও রোলে দেখা যাবে দুই বাংলার দর্শকনন্দিত অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীকে। অনুষ্ঠানে চঞ্চল চৌধুরী মাইক্রোফোন হাতে নিয়েই বললেন, কিরে তুফান ভয় পাইছিস? এটি সিনেমাটির জনপ্রিয় একটি ডায়ালগ। অসাধারণ গুণী অভিনেতার কথাতেই বোঝা গেল সিনেমাটির আদ্যোপান্ত কি হতে চলেছে। এখন পর্দায় শাকিব-চঞ্চলের কেমিস্ট্রি উন্মোচন হতেই বাকি। আর দর্শক অধীর আগ্রহে তার প্রতীক্ষা করছে।
সংবাদ সম্মেলনে যেন নক্ষত্র হয়ে ধরা দিলেন কলকাতা থেকে উড়ে আসা মিমি চক্রবর্তী। ভিন্ন রকম উপস্থিতিতে মুহূর্তেই হয়ে উঠলেন সব সেরাদের মধ্যমণি। এমনকি গ্রুপ ছবিতে দাঁড়িয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রতি নিজ হাতে এঁকে দিলেন ভালোবাসার চিহ্ন; হার্ট। ভালোবাসার চিহ্ন একে দিয়ে পুরো বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিলেন ভালোবাসার হৃৎস্পন্দন ।
মিমি বললেন, ‘মেগাস্টার শাকিব খানের সাথে স্ক্রিন শেয়ার করতে পারা আমার জন্য এক বিরাট ব্যাপার ছিল।’ তিনি আরো বলেন, ‘এই সিনেমায় কাজ করার সময় একবারও মনে হয়নি বাইরে কোনো সিনেমাতে কাজ করছি। অনেকের সাথে প্রথম কাজ করেছি ‘তুফান’ সিনেমায়। শাকিব খান, চঞ্চল চৌধুরী, নাবিলা অসাধারণ। আমি আশা করব এই সিনেমার কথা ঘরে ঘরে হবে।’
`তুফান` সিনেমার আরেক নায়িকা নাবিলা বললেন, ‘‘এত বছর পর বড় পর্দায় ফিরছি ‘তুফান’ দিয়ে। সবার এত সাড়া আর আগ্রহ দেখে মনে হচ্ছে প্রথম সিনেমার পর এত বছরের অপেক্ষাটা বৃথা যায়নি।’’
শাকিব খান এদিন নতুন করে পুরনো ভবিষ্যদ্বাণীই আবারো শোনালেন । বললেন, ‘‘দর্শক আমাদের পাশে থাকলে ‘তুফান’ ইতিহাস গড়বে।’’
সিনেমাটিতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খান। তার বিপরীতে আছেন কলকাতার অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী ও বাংলাদেশের মাসুমা রহমান নাবিলা। গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে আছেন জনপ্রিয় মুখ চঞ্চল চৌধুরীকে।এ সিনেমায় আরও রয়েছেন শহীদুজ্জামান সেলিম, ফজলুর রহমান বাবু, গাজী রাকায়েত, একে আজাদ সেতু এবং হাসনাত রিপনসহ প্রমুখ ।
উল্লেখ্য, আলফা আই স্টুডিওস-এর ব্যানারে নির্মিত `তুফান` ছবিটির ডিজিটাল পার্টনার চরকি এবং ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিবিউটর এসভিএফ।
You must be logged in to post a comment.