বিশ্বকাপে চলছে মরক্কো রূপকথা। আরব ও এশিয়ার বাকিরা যেখানে ব্যর্থ সেখানে রীতিমতো সবাইকে চমকে দিচ্ছে অ্যাটলাস লায়ন্স। যার নেপথ্য ইউরোপে জন্ম নেয়া দলটির একঝাঁক ফুটবলার। বড় দলে খেলার হাতছানি থাকলেও যারা বেছে নিয়েছিলেন পিতৃ কিংবা মাতৃভূমিকে।
স্পেনে জন্ম, মাদ্রিদে বেড়ে উঠা। রিয়ালের কাস্তিয়ার পর খেলেছেন লস ব্লাঙ্কোদের সিনিয়র দলে। চাইলেই স্পেনের হয়ে খেলতে পারতেন আশরাফ হাকিমি। কিন্তু এই রাইটব্যাক বেছে নেন বাবা-মায়ের দেশ মরক্কোকে।
নেদারল্যান্ডসে জন্ম নেয়া হাকিম জিয়েশকেতো মরক্কোর জার্সি বেছে নেয়ায় শুনতে হয়েছে নানা কটু কথাও। ডাচ জাতীয় দলের দরজা খোলা থাকলেও রক্তের টান উপেক্ষা করতে পারেননি এই অ্যাটাকার। কমলা রং ছেড়ে তাই অবলিলায় বেছে নেন লাল-সবুজকে।
বৃথা যায়নি শেকড়ের প্রতি হাকিমি-জিয়েশদের ভালোবাসা। আরব ও আফ্রিকার একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে এখনও টিকে আছে বিশ্বকাপে। রূপকথার জন্ম দিয়ে প্রথমবারের মতো নাম লিখিয়েছে গ্রেটেস্ট শো অন আর্থের কোয়ার্টার ফাইনালে।
কাতার বিশ্বকাপে মরক্কো বিজয়গাঁথার নায়ক শুধু এ দুই ফুটবলারই নন। স্কোয়াডের ১৪ জনই অভিবাসী। যাদের বাবা-মা কিংবা দুজনের কোন একজন মরোক্কান। সর্বোচ্চ চারজন করে ডাচ ও বেলজিয়াম বংশোদ্ভূত। দুজন করে ফ্রান্স ও স্পেনের। স্পেন ম্যাচের নায়ক গোলরক্ষক ইয়াসিন বুনো কানাডিয়ান। ইতালিতে জন্ম নেয়া দলের একমাত্র ফুটবলার ওয়ালিদ ছেদিরা।
২৬ জনের দলে মাত্র ১২ জন লোকাল। নায়েফ আগুয়ার্দ, আজেদিন ওনাহি, ইউসেফ এল নেসেরি, আহমেদ রাদারাই জন্মগতভাবেই আফ্রিকান আরব দেশটির নাগরিক।
একাদশেও তাই ইউরোপিয়ানদের আধিপত্য। স্পেনকে হারিয়ে ইতিহাস গড়া ম্যাচের একাদশে খেলেছেন ৮ জন অভিবাসী ফুটবলার।
জাতীয়তায় ভিন্নতা হলেও মরোক্কান ফুটবলারদের ধর্ম এক, সবাই মুসলিম। এমনকি দলের কোচও। প্রতি অর্জনের পরই সৃষ্টিকর্তার প্রতি তাদের সেজদাহর ছবি দেখা মেলে টুর্নামেন্ট জুড়ে।
দেখা মিলেছে ফিলিস্তিনি মুসলমানদের প্রতি তাদের ভালোবাসাও। তাই তো বিজয় উদযাপনে সঙ্গী ছিল ফিলিস্তিনের পতাকা।
হাকিমি-জিয়েশদের দেখানো পথে হেটেছে দেশটির সমর্থকরাও। ইসরাইলি দখলদারিত্ব আর বর্বরাতা থেকে মুক্তির প্রতিবাদে দেশটির সংবাদ মাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলতেও আপত্তি এটলাস লায়ন্স সমর্থকদের।
You must be logged in to post a comment.