প্রায় কাছাকাছি সময়ে সিনেমায় আবির্ভাব। একজন বাংলার মানুষের কাছে পরিচিত পর্দার ‘নবাব’ হিসেবে, আরেকজন ‘মিয়া ভাই’। অভিনয় দিয়ে পেয়েছেন কোটি মানুষের ভালোবাসা। দুজনেরই জন্মদিন বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট)।
বলছি ঢাকাই সিনেমার বর্ষীয়ান অভিনেতা প্রবীর মিত্র এবং ফারুকের কথা। জন্মদিনে এই দুই তারকাকে স্মরণ করছেন সিনেমার মানুষ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানাচ্ছেন শুভেচ্ছা।
যদিও এই দুই তারকা শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থ। এরমধ্যে নায়ক ফারুক চিকিৎসা নিতে দীর্ঘ দিন ধরে অবস্থান করছেন দেশের বাইরে। ৮১ বছর বয়সী প্রবীর মিত্রও এখন বার্ধ্যক্যে উপনিত। আগের মত আর হাঁটাচলা করতে পারেন না। তার দিন কাটছে ঘরে হুইল চেয়ারে বসে কিংবা বিছানায় শুয়ে।
তবে জন্মদিনের বিশেষ মুহূর্তটি ঘরোয়া আয়োজনে পালন করবেন। এ বিষয়ে বুধবার সন্ধ্যায় প্রবীর মিত্রের পুত্রবধু সোনিয়া জানান, প্রবীর মিত্র আগের মতো সুস্থ না থাকলেও প্রতি বছরের মতো এবারও পারিবারিক আয়োজনে জন্মদিন পালনের উদ্যোগ নিয়েছেন।
প্রায় চার শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেন প্রবীর মিত্র। গত কয়েক বছর ধরে হাঁটুর সমস্যায় পড়েছেন তিনি। মাস ছয়েক আগে ভারতে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন অস্টিওপরোসিসে রোগের। এখন সপ্তাহে তার তিনবার কেমো দেয়া লাগে। নীরবে নিভৃতে ও একাকিত্বে ধানমন্ডিতে ছেলের বাসায় দিন কাটাচ্ছেন নবাব সিরাজউদ্দৌলা খ্যাত এ অভিনেতা।
স্কুলজীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে অভিনয় করেছিলেন প্রবীর মিত্র। পরবর্তীতে পরিচালক এইচ আকবরের হাত ধরে ‘জলছবি’ নামে একটি চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়েছে বড়পর্দায় তার অভিষেক হয়। মূলত এ ছবিতে কাজের ব্যাপারে তার বন্ধু এটিএম শামসুজ্জামানই তাকে সহযোগিতা করেছিলেন। ১৯৪০ সালে পুরনো ঢাকায় জন্মগ্রহণকারী প্রবীর মিত্র স্কুলজীবন থেকেই নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত হন।
অন্যদিকে জন্মদিন উপলক্ষ্যে বুধবার এক ভিডিও বার্তায় অভিনেতা ফারুক জানিয়েছেন, ‘আমার জন্মদিনে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানাই। সবার কাছে আমার অনুরোধ, গুজবে কান দেবেন না। আমি আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। ইনশাআল্লাহ, আমি খুব শিগগির দেশে ফিরবো।’
এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ সিনেমার মাধ্যমে ফারুকের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার শুরু। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে তিনি অভিনয় করেছেন ‘আবার তোরা মানুষ হ’, ‘আলোর মিছিল’, ‘সুজন সখী’, ‘লাঠিয়াল’, ‘সূর্যগ্রহণ’, ‘মাটির মায়া’, ‘নয়নমনি’, ‘সারেং বৌ’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘নাগরদোলা’, ‘দিন যায় কথা থাকে’, ‘কথা দিলাম’, ‘মাটির পুতুল’, ‘সাহেব’, ‘ছোট মা’, ‘এতিম’, ‘ঘরজামাই’, ‘মিয়া ভাই’র মতো অসংখ্য সিনেমায়।
ফারুক তার অভিনয়ের জন্য ১৯ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে মনোনীত হয়েছিলেন। কিন্তু তার হাতে পুরস্কার উঠেছিল কেবল একবার। অবশ্য ২০১৬ সালে তাকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আজীবন সম্মাননায় ভূষিত করা হয়।
গেল বছরের ৪ মার্চ নিয়মিত চেকআপের জন্য সিঙ্গাপুর যান নায়ক ও ঢাকা-১৭ আসনের এই সংসদ সদস্য। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে সেখানে অবস্থান করেই চিকিৎসা নিতে থাকেন। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা বেশ ভালো বলে জানিয়েছে পরিবার।
You must be logged in to post a comment.