ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা সাদেক বাচ্চু আর নেই। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী সাদেক বাচ্চুর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন ”আজ দুপুর ১২টা পাঁচে তিনি মারা যান।”
বেশ কিছূদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন এই অভিনেতা। তার করোনা হয়েছিল। বাচ্চুর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে মহাখালীতে অবস্থিত ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় অভিনেতা সাদেক বাচ্চুকে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়েছিল। আজ তিনি সকলকে ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন।
ডাকবিভাগের সাবেক কর্মকর্তা সাদেক হোসেন বাচ্চু ১৯৮৫ সালে চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন। ‘রামের সুমতি’র মাধ্যমে যাত্রা শুরুর পর বহু জনপ্রিয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি।
৫০ বছরেরও বেশি সময়ের অভিনয় ক্যারিয়ার তার। শুরুতে মঞ্চ নাটকে অভিনয় করতেন। মতিঝিল থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। এ দলের সভাপতিও ছিলেন। বেতারে একটা সময়ে অসংখ্য নাটক করেছেন। বেতারের খেলাঘর তার আলোচিত একটি নাটক।
টেলিভিশন নাটকে প্রথম অভিনয় করেন ১৯৭৪ সালে। নাটকটির নাম ছিল- প্রথম অঙ্গীকার। প্রথম সিনেমায় অভিনয় করেন আশির দশকে। সিনেমাটির নাম- রামের সুমতি। পরিচালনা করেন শহিদুল আমিন।
সাদেক বাচ্চু ঢালিউডের খলনায়ক হিসেবে সমাদৃত তবে কিন্তু তিনি নায়ক হয়েই বড় পর্দায় উপস্থিত হয়েছিলেন। ১৯৮৫ সালে রামের সুমতি চলচ্চিত্রে নায়কের ভূমিকায় তিনি বড় পর্দায় অভিষিক্ত হন। সুখের সন্ধানে চলচ্চিত্র দিয়ে খল চরিত্রে অভিনয় শুরু করেন। এরপর থেকে খল চরিত্রে অভিনয়ের জন্য অধিক জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। নব্বই দশকে এহতেশামের ‘চাঁদনী’ ছবিতে অভিনয়ের পর জনপ্রিয়তা পান খলনায়ক হিসেবে। এই পরিচয়েই দেশজুড়ে খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে সাদেক বাচ্চুর।
বহুমাত্রিক এ অভিনেতার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে- জোর করে ভালোবাসা হয় না (২০১৩), জজ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার (২০১৩), জীবন নদীর তীরে (২০১৩), তোমার মাঝে আমি (২০১৩), ঢাকা টু বোম্বে (২০১৩), ভালোবাসা জিন্দাবাদ (২০১৩), এক জবান (২০১০), আমার স্বপ্ন আমার সংসার (২০১০), মন বসে না পড়ার টেবিলে (২০০৯), বধূবরণ (২০০৮), ময়দান (২০০৭), আমার প্রাণের স্বামী (২০০৭), আনন্দ অশ্রু (১৯৯৭), প্রিয়জন (১৯৯৬), সুজন সখি (১৯৯৪)।
১৯৫৫ সালের ১ জানুয়ারি ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন গুণী এ অভিনেতা। অভিনয় ছাড়াও দীর্ঘ দিন তিনি বাংলাদেশ ডাক বিভাগে চাকরি করেছেন। ‘একটি সিনেমার গল্প’ সিনেমায় অভিনয় করে খল অভিনেতা হিসেবে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।
You must be logged in to post a comment.