বাংলাদেশের জাতীয় দলের এক সময়কার মাঠ কাপাঁনো ক্রিকেটার আশরাফুল এবার টেলিভিশন পর্দা কাপাঁতে আসছে আরটিভিতে। তিনি একটি ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করেছেন। ক্রিকেটার আশরাফুলের সাথে জাতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের খেলোয়ার জাহানারা আলম এই ধারাবাহিকে অভিনয় করছেন।
আরটিভিতে ৯ আগস্ট থেকে প্রতি মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় প্রচার হচ্ছে ধারাবাহিক নাটক গোল্ডেন সিক্স। নাটকটিতে অভিনয় করেছেন, যাহের আলভি, মোহাম্মদ আশরাফুল (ক্রিকেটার), জাহানারা আলম (জাতীয় মহিলা ক্রিকেটার), শেহতাজ, রোকেয়া জাহান চমক, মিহি আহসান, তিথী, অলিউল হক রুমী, মুকিত যাকারিয়া, শরাফ আহমেদ জীবন, সোহেল খান, মুসাফির সাইদ, তমাল মাহবুব, জ্যাকী, নাদিম, আনোয়ার, ইমরান হোসেন আযান, তামান্না, সাবনীন এবং হাসিবুল হোসেন শান্ত (সাবেক ক্রিকেটার)। নাটকটি রচনা ও পরিচালনা করেছেন তারিক মুহাম্মদ হাসান।
গল্প সংক্ষেপ : শিমুলতলী গ্রামের যুবক হাসান বেশ কিছু চারা গাছ নিয়ে রাস্তার ধারে রোপন করতে এসে শাবল দিয়ে মাটি খুড়তে যেয়ে হঠাৎ একটা ধাতুর সাথে শাবলের আঘাত লাগে। মাটি খুড়তেই বেরিয়ে আসে একটা ধাতব বাক্স। বাক্স খুলে হাসান দেখে বাক্স ভর্তি সোনার বার। প্রায় হাফ এক কেজি ওজনের ১০/১২ টা সোনার বার ভর্তি বাক্স পেয়ে চমকে উঠে হাসান। সে গুপ্তধন পেয়ে গেছে। কিন্তু ঝামেলা হয় একটা। পুরো ঘটনাটা দেখে ফেলে গ্রামের দুষ্ট ব্যবসায়ী সদরুলের কর্মচারী রূপচাদ । সে পুরো ঘটনাটা জানাতে এক দৌড়ে চলে যায় সদরুলের কাছে। হাসান ভাবে, যেহেতুৃ মাখন ও সদরুল এই গুপ্তধন পাওয়ার কথা জেনে গেছে, তার মানে পুরো গ্রামে এই ঘটনা রাষ্ট্র হতে বেশি সময় লাগবে না। তার মানে এই গুপ্তধন ধরে রাখতে কষ্ট হবে তার। সে এক মুহুর্ত ভাবে ও গুপ্তধনের বাক্সটা নিয়ে চলে যায়।
গ্রাম্য বাজারের স্বর্ণের অলঙ্কারের দোকানের মালিক শফিক চাচার সাথে দেখা করেছে হাসান। শফিক চাচা হাসানকে নিজের ছেলের মতো ভালবাসে। শফিক চাচার সুন্দরী মেয়ে গোলাপের সাথেও রয়েছে হাসানের ভাল সম্পর্ক।
ঘটনাক্রমে শফিক চাচা ও হাসানের বুদ্ধতে ও গোলাপের সহায়তায় সেই যাত্রায় গুপ্তধনটা রক্ষা করতে পারে হাসান। গ্রামের সবাই জানে হাসান নকল গুপ্তধন পেয়ে পুলিশকে দিয়ে দিয়েছে। কিন্তু আসল গুপ্তধনটাতো থেকেই গেছে হাসানের কাছে। আর হাসান ছাড়া এটা জানে কেবল শফিক চাচা ও তার কণ্যা গোলাপ।
গোলাপ ও হাসান এই গ্রামে একই সাথে বড় হয়েছে। দুজনের বয়সের পাথ্যক্য ৩ বছর। গোলাপ হাসানকে হাসান ভাই বলে ডাকলেও সে ছোট বেলা থেকেই ভালবাসে হাসানকে। কিন্তু হাসান সেটা কখনই বুঝতে পারেনি। হাসান সব সময় গোলাপকে ভাল চোখে দেখেছে। নানা ঘটনায় ওদের অনেক ভাল ভাল সময় কেটেছে এই গ্রামে। দুজনের বয়সের সামান্য পার্থক্য থাকলেও দুজনে বন্ধুর মতো বড় হয়েছে। তাই ওদের বোঝাপড়া খুব ভাল। গোলাপের সব কিছু বোঝে হাসান। বোঝেনা শুধু একটা বিষয়। গোলাপের ভালবাসাটা। হাসান গোলাপকে বন্ধু হিসেবে দেখলেও গোলাপ ভালবাসে হাসানকে। কিন্তু কখনও তা বলতে পারে নি। এদিকে হাসানের মা কিন্তু গোলাপকে খুব পছন্দ করেন। তিনি মনে মনে গোলাপকে নিজের ছেলের বৌ হিসেবে ভেবেই রেখেছে।
গুপ্তধন পেয়ে হাসান এবার নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখে। হাসান তার মা ও এলাকার সবাইকে জানায় যে সে ঢাকা যাচ্ছে চাকরীর খোজে। কিন্তু গোলাপ ও গোলাপের বাবা জানে আসল কারন। হাসান ঢাকা যাচ্ছে তার গুপ্তধনের তিন কোটি টাকা মূল্যের স্বর্ণ গুলো বিক্রি করতে।
হাসান ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথে গোলাপ দাড়িয়ে থাকে। হাসানকে শুভকামনা জানালেও তার মনের কথাটা আজও বলতে পারে না হাসানকে। হাসান দ্রুত বোটিপতি হয়ে গ্রামে ফিরবে বলে চলে যায়। সেই আশায় দিন কাটতে থাকে গোলাপের।
ঢাকার উদ্দেশ্যে ট্রেন চলছে। ট্রেনের একটা ভিআইপি কামড়ায় সিট নিয়েছে হাসান। কিছুক্ষণ পর চোখে ঘুম চলে আসলে ট্রেনের ঝাকিতে হাসানের চোখ খুললে দেখে তার সামনের সিটে বসে আছে একটা মেয়ে। ঘটনাক্রমে পলি নামের এই মেয়েটির সাথে কথা হয় হাসানের। কিন্তু পরিচয় হয় না। সেও ঢাকায় ফিরছে।
কাকতালীয় ভাবে এই কামড়ার হাসান ও পলি দুজনের ব্যাগের রং কালো এবং দেখতে একই রকম। বিষয়টা ওরা প্রথমে খেয়াল করে না। পলির সাথে কথা বলতে বলতে ভদ্রতা বসত হাসান তার হাতে থাকা ব্যাগটা ট্রেনের কামড়ার উপরের তাকে রাখে। যেখানে রাখা ছিলো পলির ব্যাগ। ট্রেন ঢাকায় পৌছালে দুজন নেমে যায়। কিন্তু যাবার সময় দুজনের ব্যাগ চেঞ্জ হয়ে যায়। কিন্তু ওরা কেউ তা খেয়াল করে না।
ঢাকায় এসে হাসান চলে আসে মোহাম্মদপুর এক বন্ধুর বাসায়। বন্ধু অফিসে ছিলো বলে হাসান একটা ফাষ্টফুডের দোকানে ঢুকে। ঢুকেই দেখে সেই দোকানে বসে খাবার কিনছে পলি। দুজনের আবার দেখা হয়ে যায়। এবার ওরা বুঝতে পারে যে দুজনে একই এলাকায় এসেছে। পলি তার বাসার জন্য খাবার কিনে নিয়ে যাচ্ছে। কারন বাসায় তার বান্ধবী রান্না করতে জানে না। দুজন আবার আলাদা হয়ে যায়। কিন্তু কেউ কারও ঠিকানা জানতে চায় না। শুধু জানে যে ওরা দুজনের মোহাম্মদপুর এলাকায় থাকছে।
বিকেলে হাসানের বন্ধু রাতুল বাড়ি ফিরলে হাসান বন্ধুর বাসায় যেয়ে উঠে। উঠেই নিজের ব্যাগটা খুলে চমকে উঠে। ব্যাগের ভেতর কেবল মেয়েদের কাপড় . . . হাসান বুঝতে পারে যে তার ব্যাগ চেঞ্জ হয়ে গেছে। তার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। ৩ কোটি টাকার স্বর্ণ আছে ঐ ব্যাগে। হাসানের ট্রেনের ঐ মেয়েটা একটা চিটার। সে ইচ্ছে করেই হাসানের ব্যাগটা নিয়ে গেছে। হাসান তার বন্ধু রাতুলকে সব কিছু বলে। রাতুল বলে সারা নামের যত মেয়ে আছে এই মোহাম্মদপুর এলাকায়, সবাইকে ওরা খুজে বের করবে। শুরু হয় হাসান ও তার বন্ধু আজাদের নতুন মিশন।
এভাবেই নানামুখী নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাবে ধারাবাহিক নাটক গোল্ডেন সিক্স এর গল্প।
You must be logged in to post a comment.