সম্প্রতি শিল্প ও সংস্কৃতিতে নিবেদিত ১৮ গুণী ও দুই সংগঠনকে শিল্পকলা পদক প্রদান করা হয়। ২০১৩ সাল থেকে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রবর্তন করে শিল্পকলা পদক। মাঝে করোনাভাইরাসের কারণে এই পদক প্রদান স্থগিত থাকায় এ বছর একসঙ্গে ২০১৯ ও ২০২০ সালের শিল্পকলা পদক প্রদান করা হলো। এই দুই বছরে ১৮ গুণীজন ও দুই সাংস্কৃতিক সংগঠন অর্জন করেছে পদক।
সম্প্রতি বর্ণিল আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও সংগঠনকে পদক তুলে দেয়া হয়। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সংস্কৃতি সচিব মো. আবুল মনসুর। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। আলোচনা ও পদক প্রদান শেষে একাডেমির শিল্পীদের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
আইনজীবীর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন জনি ডেপ
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বছরের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের লালন, ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন আমাদের শিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মীরা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে তারা নিঃস্বার্থভাবে অবদান রেখে চলেছেন।
২০১৯ সালে শিল্পকলা পদকপ্রাপ্তরা হলেন নাট্যকলায় মাসুদ আলী খান, কণ্ঠসংগীতে হাসিনা মমতাজ, চারুকলায় আবদুল মান্নান, চলচ্চিত্রে অনুপম হায়াৎ, নৃত্যকলায় লুবনা মারিয়াম, লোকসংস্কৃতিতে শম্ভু আচার্য্য, যন্ত্রসংগীতে মো. মনিরুজ্জামান, ফটোগ্রাফিতে এমএ তাহের, আবৃত্তিতে হাসান আরিফ এবং সৃজনশীল সাংস্কৃতিক সংগঠন হিসেবে ছায়ানট। আর বাচিকশিল্পী হাসান আরিফ প্রয়াত হওয়ায় শিল্পীর পক্ষে পদক গ্রহণ করেন তার বোন রাবেয়া রওশন।
২০২০ সালের পদকপ্রাপ্তরা হলেন কণ্ঠসংগীতে মাহমুদুর রহমান বেণু, চারুকলায় শহিদ কবীর, যন্ত্রসংগীতে মো. সামসুর রহমান, ফটোগ্রাফিতে আ ন ম শফিকুল ইসলাম স্বপন, চলচ্চিত্রে শামীম আখতার, নাট্যকলায় মলয় ভৌমিক, আবৃত্তিতে ডালিয়া আহমেদ, লোকসংস্কৃতিতে শাহ আলম সরকার, নৃত্যকলায় শিবলী মোহাম্মদ এবং সৃজনশীল সাংস্কৃতিক সংগঠন হিসেবে দিনাজপুর নাট্য সমিতি।
প্রসঙ্গত, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে চলচ্চিত্র গবেষক হিসেবে পুরস্কার প্রদানের কোন ক্যাটাগরি নেই। তবে এবারই প্রথম সরকারি কোনো পুরস্কারে যুক্ত হলো চলচ্চিত্র গবেষক ক্যাটাগরি। আর প্রথমবারই চলচ্চিত্র গবেষক হিসেবে শিল্পকলা পদক অর্জন করলেন বরেণ্য সাংবাদিক ও চলচ্চিত্র গবেষক অনুপম হায়াৎ। ৪৯ বছর ৩ মাস যাবৎ লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত এই মানুষটি। চলচ্চিত্রকে ভালোবেসে নিরলসভাবে গবেষণার কাজ করে গেছেন তিনি।
অনুপম হায়াৎ ১৯৫০ সালের ১ জুন নারায়ণগঞ্জ জন্মগ্রহণ করেন। পিতা সফিউদদীন ভূইয়া ও মাতা শাহেরা বানু । তিনি মনোহরদী প্রাথমিক স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা, পাড়গাও হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা, শেখ বোরহান উদ্দিন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ১৯৭২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় এম. এ সম্পন্ন করেন। ১৯৭৩ সাল থেকে চলচ্চিত্র বিষয়ক গবেষণা, লেখালেখি, সাংবাদিকতা, গ্রন্থরচনা, তথ্য ও নিদর্শন সংগ্রহ, শিক্ষকতা এবং সংগঠন চর্চায় জড়িত। চলচ্চিত্র বিষয়ক প্রথম লেখা ছাপা হয় ১৯৭৩ সালে সাপ্তাহিক চিত্রালীতে। চলচ্চিত্র বিষয়ক প্রথম গ্রন্থ ‘চলচ্চিত্রের খোলা জানালায়’ ছাপা হয় ১৯৮৩ সালে।
You must be logged in to post a comment.