এ বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি প্রয়াত উপমহাদেশ তথা বিশ্বসংগীত দরবারের বরেণ্য শিল্পী লতা মঙ্গেশকরের গানে কন্ঠ দিলেন দেশের জনপ্রিয় শিল্পী নীলু আহসান। লতা মঙ্গেশকরের গাওয়া জনপ্রিয় কয়েকটি গান কথা ও সুর ঠিক রেখে গেয়েছেন এই কন্ঠশিল্পী।
কন্ঠশিল্পী নীলু আহসান বলেন, “আমি ছোটবেলা থেকেই লতাজীর গান গেয়ে গেয়ে বড় হয়েছি এবং কন্ঠ ও হৃদয়ে তাঁর গানগুলো ধারণ করার চেষ্টা করেছি।” এই শিল্পী আরও বলেন, আমি উনার একজন বড় ভক্ত। তিনি আমার আইকন। এখনো আমার বিশ্বাস হয় না যে উনি এই পৃথিবীতে আর নেই। তবে, লতাজী তাঁর গানের মাধ্যমে লাখো কোটি মানুষের অন্তরে চিরদিন বেঁচে থাকবেন।
তিনি আরও বলেন, লতা মঙ্গেশকর একটি ইতিহাস। তাঁর যে গানের ভান্ডার তাতে তিনি একটি সঙ্গীত প্রতিষ্ঠান। সঙ্গীত ভূবনের একটি আদর্শ। অনেক বিশেষণেই তাঁকে বিশেষিত করা যায়। তবে তাঁর জন্য আমার মতে মানানসই বিশেষণ হচ্ছে-তিনি একজন খাঁটি সঙ্গীতের মানুষ। যিনি সারা জীবন কেবল গানকে ভালোবেসে কোটি কোটি মানুষকে তাঁর সুরের মুর্ছনায় বিমোহিত করে রেখেছেন।
নীলু আহসানের বাংলা ও হিন্দিসহ প্রায় ২৮৮টি গান ভিডিও আকারে ইউটিউব এ প্রকাশ পেয়েছে। কিছু গানের মডেল হয়েছেন তার স্বামী নাজমুল আহসান। শিল্পীর অধিকাংশ গানের সংগীত পরিচালনা করেছেন আহমেদ ফরিদ। প্রতিটি গানের মিউজিক ভিডিও পরিচালনা করেছেন জিনিয়া রুমি।
উল্লেখ্য, নীলু আহসানের আরও অন্তত: ৫৫টি গান ইউটিউবে মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। আর সাত দশক ধরে দর্শক ও সমালোচকের হৃদয় তৃপ্ত করে চলা কিংবদন্তী শিল্পী লতা মঙ্গেশকর ১৯২৯ সালে ভারতের ইন্দোরে জন্মেছিলেন। কিন্তু তাঁর সংগীত ভারত ছাপিয়ে তাঁকে পৌঁছে দিয়েছে বিশ্বসংগীতের দরবারে।
তাঁর সঙ্গীত ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল ১৯৪২ সালে, মারাঠি গান গেয়ে। ১৯৪৬ সালে তিনি প্রথম হিন্দি সিনেমায় গান করেন। বসন্ত জোগলেকরের ‘আপ কি সেবা মে’ ছবিতে তিনি ‘পা লাগু কার জোড়ি’ গানটি গেয়েছিলেন। দুই বছর পর সুরকার গুলাম হায়দার তাঁকে প্রথম বড় সুযোগ দেন।
‘মজবুর’ ছবিতে ‘দিল মেরা তোরা’ গানটির পর লতাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। লতা মঙ্গেশকর প্রায় ৩০ হাজার গান গেয়েছেন । তিনি ৩৬টি ভাষায় গান করেছেন। এর মধ্যে আছে বাংলাও। ‘প্রেম একবার এসেছিল নীরবে’, ‘আষাঢ় শ্রাবণ মানে না তো মন’, ‘ও মোর ময়না গো’, ‘ও পলাশ ও শিমুল’, ‘আকাশ প্রদীপ জ্বেলে’সহ আরও অনেক বিখ্যাত বাংলা গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি।
২০০১ সালে লতা মঙ্গেশকর ভারতের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ভারতরত্ন অর্জন করেন। ১৯৮৯ সালে তিনি দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার লাভ করেন।
You must be logged in to post a comment.