শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ১১:৪১ পূর্বাহ্ন

কোটা আন্দোলনে সহিংসতা নিয়ে যা বললেন কবীর সুমন

বিনোদন ডেস্ক / ৬৫ জন দেখেছেন
আপডেট : জুলাই ১৮, ২০২৪
কোটা আন্দোলনে সহিংসতা নিয়ে যা বললেন কবীর সুমন
দর্শক ফোরামের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন

দেশে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা নিয়ে মুখ খুলেছেন কলকাতার প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী কবীর সুমন। আন্দোলনকারীদের ওপর সহিসংতা বন্ধে সব পক্ষকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

আজ সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এক পোস্টে তিনি বলেছেন, ‘করজোড়ে সব পক্ষকে মিনতি করছি, অনুগ্রহ করে হিংসা-হানাহানি বন্ধ করুন। ঢাকা সরকারকে অনুরোধ করছি—বাংলা ভাষার কসম, শান্তি রক্ষার চেষ্টা অব্যাহত রাখুন। আপনাদের ছাত্রবাহিনী যেন হিংসার আশ্রয় না নেন।’

ওই পোস্টে কবীর সুমন লেখেন, ‘আমি ভারতের নাগরিক। বাংলাদেশ আমাদের প্রতিবেশী। তার বিষয়-আশয়ে নাক গলানোর অধিকার আমার নেই। সেটা করতে চাইও না। তবু বাংলাদেশের অনেকের কাছ থেকে যে ভালোবাসা আমি পেয়েছি, তা ভুলে থাকতেও পারছি না। ভুলবই-বা কেন?’

‌‘কতটা পথ পেরোলে’খ্যাত গায়ক লিখেছেন, ‘‘ছবি দেখছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। একটু আগেই দেখলাম। মিছিল করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। নেপথ্যে শোনা যাচ্ছে কাজী নজরুল ইসলামের ‘কারার ঐ লৌহকপাট/ ভেঙে ফেল্ কর রে লোপাট’! মনে হচ্ছে গানটি এডিট করে বসানো হয়েছে ভিডিওর সঙ্গে। ঠিক কাজই করা হয়েছে। কত সময়ে দেখেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা আমার গানের লাইন লিখে দিয়েছেন দেওয়ালে। পশ্চিমবঙ্গে সে তুলনায় কিছুই দেখিনি। বলতে দ্বিধা নেই, মনে মনে আমি বাংলাদেশেরও নাগরিক।’

এই শিল্পী আরও বলেন, ‘আমার জীবনসায়াহ্ন কাটছে মাভাষায় খেয়াল রচনা করে, গেয়ে, শিখিয়ে। পশ্চিমবঙ্গের সরকার আমার বাংলা খেয়ালকে স্বীকৃতি দিয়েছেন, যদিও তাঁদের পেটোয়া এক শিল্পী বাংলা খেয়াল নিয়ে এবং সেই সঙ্গে আমায় বিদ্রূপ করেছেন এবং এই রাজ্যের সরকারঘনিষ্ঠ একটি পত্রিকা সেই বিদ্রূপ ও মগজহীন উদ্ভট বক্তব্য ঘটা করে ছাপিয়েছেন—আমার একটি ব্যঙ্গচিত্রসমেত।’

কবীর সুমন আরও লেখেন, ‘আমার জীবনের সেরা কাজ এবং আমার জীবনসায়াহ্নের প্রধান কাজ বাংলা খেয়াল বাংলাদেশে চর্চা করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের শিল্পী মরহুম আজাদ রহমান বেশ কিছু বাংলা খেয়াল রচনা করে গিয়েছেন বিভিন্ন রাগে। বাংলা ভাষা আর বাংলা খেয়ালের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে আমি বাঁধা ভালোবাসার বন্ধনে। গতবার ঢাকায় গানের অনুষ্ঠান করতে গিয়ে যে সম্মান ও ভালোবাসা পেয়েছি, তা ভারতে পেয়েছি ক’বার?’

কোটা আন্দোলনে সহিংসতাকে ইঙ্গিত করে কবীর সুমন লেখেন, ‘এহেন আমি বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থায় চুপ করে বসে থাকতে পারি না। থেকেছি কয়েক দিন। আর পারছি না। কিন্তু অবস্থাটা যে ঠিক কী, কী কী কারণে যে এমন হলো এবং হচ্ছে, কারা যে এতে জড়িত তা-ও তো ঠিকমতো জানি না। তা-ও পঁচাত্তর উত্তীর্ণ এই বাংলাভাষী করজোড়ে সব পক্ষকে মিনতি করছি: অনুগ্রহ করে হিংসা-হানাহানি বন্ধ করুন। ঢাকা সরকারকে অনুরোধ করছি: বাংলা ভাষার কসম, শান্তি রক্ষার চেষ্টা অব্যাহত রাখুন। আপনাদের ছাত্রবাহিনী যেন হিংসার আশ্রয় না নেন। আর কী বলি! আমি তো সশরীরে যেতে পারছি না ঢাকায়। পারলে যেতাম। রাস্তায় বসে পড়ে সকলকে শান্তি রক্ষার জন্য আহ্বান করতাম।’

শহীদের রক্ত কখনও বিফলে যায় না: ফারুকীশহীদের রক্ত কখনও বিফলে যায় না: ফারুকী
শেষে একটি স্বরচিত কবিতা জুড়ে দিয়েছেন সুমন। লিখেছেন—
‘হানাহানি বন্ধ হোক।
বন্ধ হোক উল্টোপাল্টা কথা বলে দেওয়া। বাঁচুক বাংলাদেশ।
বাঁচুন বাংলাদেশের সকলে।
জয় বাংলাদেশ
জয় মুক্তিযুদ্ধ
জয় অসংখ্য বাংলাদেশির শাহাদাত ও অপূরণীয় ক্ষতিস্বীকার
জয় বীরাঙ্গনারা
জয় বাংলা ভাষা!’

অন্য একটি পোস্টে গান লিখেছেন কবীর ‍সুমন। শিরোনাম ‘বিরোধী হলেই রাজাকার! বলে দাও তবে দেশটা কার/ দেশটা কার দেশটা কার!’ গানটির কয়েক ছত্র এ রকম—

‘বাংলা আমার একাত্তরের
মুক্তির গান রক্তপাত
বঙ্গবন্ধু আমারও নেতা
কাঁদছে দিন কাঁদছে রাত
প্রথম ঢাকায় ছিয়ানব্বোই
মীরপুরে গান তোমাকে চাই
ভাষা মতিনের স্নেহের ছোঁয়া
চিবুক ছুঁলেন খালাম্মাই’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

এ বিভাগের আরো খবর

২১ জুন-23 অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান