স্ট্রাইকার ক্রিস্টিয়ান পুলিসিচের একমাত্র গোলে ইরানকে হারিয়ে কাতার বিশ^কাপের শেষ ষোলোতে নাম লেখালো যুক্তরাষ্ট্র। আজ গ্রুপ-বি’তে শেষ রাউন্ডের ম্যাচে ইরানের বিপক্ষে ১-০ গোলে জয় পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এই জয়ে ৩ খেলায় ৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয়স্থানে থেকে গ্রুপ রানার্স-আপ হয়ে শেষ ষোলোতে উঠলো যুক্তরাষ্ট্র। এই গ্রুপ থেকে ৭ পয়েন্ট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে নক-আউট পর্বে ইংল্যান্ড। ইরান ৩ ও ওয়েলস ১ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শেষ দুই দল হিসেবে বিশ^কাপ শেষ করলো।
গ্রুপে ২টি করে খেলা শেষে ইরান ৩ ও যুক্তরাষ্ট্রের ২ পয়েন্ট। এ অবস্থায় গ্রুপের শেষ ম্যাচে জিতলেই শেষ ষোলো নিশ্চিত। ড্র হলে ও অন্য ম্যাচে ওয়েলসের বিপক্ষে ইংল্যান্ড জিতলে পরের রাউন্ডে যাবে ইরান। এমন সমীকরনকে সাথে নিয়ে ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে চলা রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে মাঠে নামে ইরান। রাজনৈতিক উত্তেজনার প্রভাব বিশ^কাপের মঞ্চেও এসে পড়েছে। এসব ভুলে মাঠের লড়াইয়ে মনোযোগি হবার লক্ষ্য দু’দলের খেলোয়াড়দের।
দেহোর আল-থুমামা স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু হতেই মধ্যমাঠ নিয়ন্ত্রনে নিয়ে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। ১১ মিনিটেই প্রথম আক্রমনে যায় তারা। মিডফিল্ডার ইউনুস মুসার ক্রস থেকে ইরানের বক্সের ভেতর হেড নেন যুক্তরাস্ট্রের স্ট্রাইকার ক্রিস্টিয়ান পুলিসিচ। তার হেড ইরান গোলরক্ষক আলিরেজা বেইরানভান্ডের হাতে জমা পড়ে।
প্রথম গোলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে যুক্তরাষ্ট্র। ২৮ থেকে ৪২ মিনিটের মধ্যে সাতবার ইরানের সীমানায় আক্রমন করে তারা। আক্রমনের তোপে এই সময়ের মধ্যে গোলও আদায় করে যুক্তরাষ্ট্র।
৩৮ মিনিটে মাঝমাঠের বাঁ-দিক দিয়ে দারুণ ক্রসে বল পান ডিফেন্ডার সার্জিনো ডেস্ট। হেড দিয়ে বল ইরানের বক্সের মধ্যে দেন ডেস্ট। বল পেয়েই ডান পায়ের শটে ইরানের জালে বল পাঠান পুলিসিচ (১-০) গোলে এগিয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র। লিড নিয়ে ম্যাচের প্রথমার্ধ শেষ করে যুক্তরাষ্ট্র। প্রথমার্ধে বিরতির আগে অফসাইডে একটি গোল বাতিল হয় যুক্তরাষ্ট্রের।
প্রথমার্ধে ৬৫ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে মোট ৯টি শট নেয় ডুক্তরাস্টও। ৩টি ছিল টার্গেটে। এই অর্ধে যুক্তরাষ্ট্রের গোরমুুখে একটি শটও নিতে পারেনি তারা।
বিরতির পর প্রথম আক্রমন করে ইরান। ৫২ মিনিটে ডিফেন্ডার রামিন রেজায়েইনার ক্রসে মাথা ছুইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গোলমুখে মারতে ব্যর্থ হন মিডফিল্ডার সামান গুড্ডোস।
দ্বিতীয়ার্ধের এই অর্ধে আক্রমনাত্মক খেলতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। ৬৯ মিনিটে ইরানের গোলমুখে বল মারার সুযোগ পায় তারা।
৭০ মিনিটে গুড্ডোসের যোগান দেয়া বলে বক্সের বাইরে থেকে ভুল শট নিয়ে দলকে গোলের আনন্দে ভাসাতে পারেননি ইরানের মিডফিল্ডার সাইদ এজাতোলাহি।
ম্যাচের পরের সময়গুলোতে গোলের জন্য মরিয়া ছিলো ইরান। ইনজুরি সময়ের তৃতীয় মিনিটে গোলের দারুন সুযোগ নষ্ট করে তারা। রামিনের ক্রস থেকে বক্সের ভেতর বল পান ডিফেন্ডার মোর্তেজা পুরালিগাঞ্জি। যুক্তরাষ্ট্রের গোলমুখে কাছে থেকেও দুর্দান্ত একটি হেড নিতে পারেনি মোর্তেজা। বল চলে যায় প্রতিপক্ষের বার ঘেষে। আরও একবার গোল করতে না পারার ব্যর্থতায় হারের স্বাদ পেতে হয় ইরানকে। এক গোল দিয়ে শেষ ষোলোতে নাম লেখায় যুক্তরাষ্ট্র।
সর্বশেষ ২০১৪ আসরে শেষ ষোলোতে খেলেছিলো যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৮ সালে বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি তারা। এক আসর বাদে আবারও নক-আউট পর্বে যুক্তরাষ্ট্র।
You must be logged in to post a comment.