ইতালির তেরনি চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের পুরস্কার জিতেছে সুন্দরবনের বাঘ-বিধবার গল্প ‘দ্য টেস্ট অব হানি’। ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের বাসিন্দাদের নিয়ে ছবিটি নির্মাণ করেছেন বাংলাদেশের দুই আলোকচিত্রী ফাবিহা মনির ও মোহাম্মদ রকিবুল হাসান।
১৬ থেকে ২৪ নভেম্বর ইতালির আমব্রিয়া প্রদেশের তেরনি শহরে অনুষ্ঠিত হয় এই উৎসব। এ বছর উৎসবের ২০তম আসরে ২৪টি দেশ থেকে জমা পড়েছিল ৩ হাজার সিনেমা। সেগুলোর মধ্য থেকে পূর্ণদৈর্ঘ্য, স্বল্পদৈর্ঘ্য, তথ্যচিত্র, অ্যানিমেশন ও ভার্চ্যুয়াল রিয়্যালিটি ঘরানার ৭৭টি ছবিকে প্রদর্শনীর জন্য বেছে নেওয়া হয়।
ব্যাংকক মুভি অ্যাওয়ার্ডস, ইন্ডিয়ে ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড, অ্যাক্টিভিস্ট উইদাউট বর্ডার প্ল্যাটফর্মগুলো স্বীকৃতি দিয়েছে দ্য টেস্ট অব হানি ছবিটিকে। এবার ইতালির তেরনি চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের পুরস্কার জিতল ছবিটি। ওই উৎসবে সেরা স্বলদৈর্ঘ্য ছবির পুরস্কার জিতেছে ‘ইন ইস্পিরিতো’ নামে আরও একটি ছবি।
গত ২৮ আগস্ট মোহাম্মদ রাকিবুল হাসানের ইউটিউব চ্যানেলে প্রথম অবমুক্ত করা হয় দ্য টেস্ট অব হানি। পৃথিবীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সুন্দরবন কীভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের মধ্যেও টিকে আছে, সেখানকার বিধবা নারীরা কীভাবে গোলপাতা ও মধু সংগ্রহ করে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন, তার হৃদয়বিদারক ছবি দেখা যাবে এই তথ্যচিত্রে।
গত ২৩ নভেম্বর উৎসবে পুরস্কারপ্রাপ্ত নির্মাতাদের হাতে স্মারক তুলে দেওয়া হয়। ফাবিহা মনির ও মোহাম্মদ রকিবুল হাসানের পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের পুরাধা ব্যক্তিত্ব আহমেদ মুজতবা জামাল। ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজক এই সংগঠক বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেন তেরনি চলচ্চিত্র উৎসবের পুরস্কার বিতরণ পর্বে।
পৃথিবীর সবেচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের বাসিন্দা শরবানু খাতুন একজন বাঘ-বিধবা। তাঁর স্বামী বাঘের হাতে প্রাণ হারিয়েছেন। তাঁর মতো বেশ ক’জন বাঘ-বিধবা সুন্দরবনে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। রীতিমতো একঘরে করে রাখা হয়েছে তাদের। সুন্দরবনের এই নারীদের জীবনসংগ্রামের মোড়কে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়েই এই তথ্যচিত্র। এর আগে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে এটি।
You must be logged in to post a comment.