আরব সাগরের মাঝে রয়েছে সুকাত্রা নামের এক বিচিত্র দ্বীপ। এই দ্বীপে এমন সব ব্যাতিক্রমী উদ্ভিদ আর প্রাণীর দেখা মেলে, যা বিশ্বের অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। যেমন অদ্ভুত চেহারার দেখতে গাছপালা এখানে, তেমনি অদ্ভূত দেখতে এখানকার পশুপাখি। যে কারণে একে এলিয়েন আইল্যান্ড বা ভিনগ্রহবাসীদের দ্বীপ বলা হয়।
ছবির মতো সুন্দর এই দ্বীপপুঞ্জের নাম সুকাত্রা। এটি চারটি দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত। এদের মধ্যে সুকাত্রা সব থেকে বড়। বাকী তিনটি হলো, আব্দ আল কুরি, দার্সা এবং সামহা। ইয়েমেনের এই দ্বীপটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এক কথায় অনন্য। সাদা বালির সৈকত আর বিরল প্রজাতির বিভিন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণী এ অঞ্চলটিকে করে তুলেছে এক অনবদ্য দর্শনীয় স্থান।
সুকাত্রা দ্বীপ জুড়ে বিরল প্রজাতির নানা উদ্ভিদের দেখা মেলে। দ্বীপের কোথাও ছাতার মতো গাছ, আবার কোথাও দেখা যায় খর্বাকৃতির গাছ। আবার কোনো গাছ পাতাহীন হলেও ডালে ডালে ফুটে আছে ফুল। উদ্ভিদগুলোর এমন অদ্ভুত গড়ন, বিশেষ করে দৃষ্টি কাড়ে।
এই দ্বীপে রয়েছে ড্রাগন ট্রি নামের এক ব্যাতিক্রমী গাছ। বিশ্বের আর কোথাও এ গাছের দেখা মিলে না। অদ্ভুত গড়নের ছাতাকৃতির এই গাছটি থেকে লাল বর্ণের আঠালো পদার্থ পাওয়া যায়। যা আয়ুর্বেদিক ওষুধ এবং রং তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। গাছটি এতটাই জনপ্রিয় যে ইয়েমেনের মুদ্রায়ও এর ছবি খোদিত আছে। এই গাছগুলোর ওপরের অংশে সবুজ পাতার ঠাস বুনোট থাকার কারণে দূর থেকে গাছগুলোকে ছাতার মতো দেখায়। দশ বছরে মাত্র তিন ফুটের মতো এরা বৃদ্ধি পায়। এ প্রজাতির গাছগুলো ৬৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাঁচে।
এ দ্বীপের আরেকটি অদ্ভুতুড়ে উদ্ভিদ হলো ডেন্ড্রোসসিয়াস। যাতে ফোটে হলুদ ও গোলাপী ফুল। গবেষকদের মতে, পানির তীব্র সংকট এবং প্রখর তাপমাত্রার কারণেই গাছগুলো এমন অদ্ভুত দেখতে হয়েছে। সুকাত্রা দ্বীপে এই ধরণের বিরল প্রজাতির ৮০০ টিরও বেশি উদ্ভিদ রয়েছে। যার মধ্যে ৩০৭টি প্রজাতি পৃথিবীর অন্য কোথাও নেই।
শুধু উদ্ভিদ নয়, এই অঞ্চলে বিচিত্র প্রজাতির প্রাণীও রয়েছে । ন্যাশনাল জিওগ্রাফির তথ্য মতে, এই দ্বীপে ৩৫ প্রজাতির প্রাণী আছে যার মধ্যে ২৯টিই নানা প্রজাতির সরীসৃপ। ত সৌন্দর্যের কারণে সুকাত্রা দ্বীপকে ২০০৮ সালে ইউনেস্কো বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে মনোনীত করে।
You must be logged in to post a comment.