হোয়াটসঅ্যাপে ‘আলো আসবেই’ নামে একটি গ্রুপের শতাধিক স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সাবেক তথ্যপ্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত ও চিত্রনায়ক ফেরদৌসের নেতৃত্বে গড়ে তোলা এই গ্রুপের স্ক্রিনশট নিয়ে এখন বইছে সমালোচনার ঝড়।
গ্রুপটিতে যাদের নিয়ে নানা রকম মন্তব্য করা হয়েছে, তাদের মধ্যে অন্যতম অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান। অভিনেতা মিলন ভট্টাচার্য সাদিয়ার স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট ‘আলো আসবেই’ গ্রুপে দিয়েছিলেন। ফাঁস হওয়া চ্যাটে সাদিয়াকে ‘তথাকথিত জনপ্রিয় অভিনেত্রী’ হিসেবেও উল্লেখ করেছিলেন মিলন।
এরপরই নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন সাদিয়া আয়মান। মিলন ভট্টাচার্যকে ট্যাগ করে তিনি লিখেছেন, ‘আপনাকে ধন্যবাদ দাদা, মানুষের মতো দেখতে, শিল্পী নামের শয়তান বেশধারীদের কাছে আমার মতো “এই সময়ের তথাকথিত জনপ্রিয় অভিনেত্রী”কে চিনিয়েছেন, যে ভুলকে ভুল বলতে জানে, সত্যকে সত্য বলতে জানে। গ্রুপের নাম দিয়েছেন “আলো আসবেই” তা বেশ ভালো, তবে আপনারা জানেন আপনাদের নিজেদের জীবনে, মস্তিষ্কে সত্যিকারের আলোর যে ভীষণ প্রয়োজন?’
আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাসের ‘গরম জল দিলেই হবে’ কথায় ঘৃণা উগড়ে দিয়েছেন চিত্রনায়িকা পরীমণি। অরুণাকে নিয়ে প্রকাশিত একটি সংবাদের ফটোকার্ড শেয়ার করে নিজের ফেসবুক পেইজে পরী লিখেছেন, ‘অমানুষ! হিংস্র! লোভী! এত হিংসা নিয়ে কখনই শিল্পী পরিচয় বহন করতে পারেন না আপনি। ধিক আপনাকে।
এই গ্রুপে নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে নিয়েও কথা হয়। ফলে ফারুকী বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নেননি। এটিকে মানবতাবিরোধী আখ্যা দিয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ফেসবুকে বিচার চেয়েছেন তিনি। ফারুকী লিখেছেন, ‘এটা নিশ্চয়ই বেদনার যে আমাদের দেশে শিল্পীর সাইন বোর্ড নিয়ে এমন লোকজন ঘুরে বেড়াতো যারা গণহত্যায় প্রত্যক্ষ উস্কানিদাতা অথবা কেউ কেউ নিরব সমর্থক ছিলো। এরা শুধু শিল্পী হিসাবে না, মানুষ হিসাবেও নীচু প্রকৃতির।
একাত্তরে জন্ম নিলে এরা রাজাকারের দায়িত্ব পালন করতো। ফলে এদের এযুগের রাজাকার বলতে পারেন। নিশ্চয়ই এদের বিচার হবে গণহত্যায় সমর্থন এবং উস্কানী দেয়ার অপরাধে। কিন্তু আশার দিকটা আপনাদের বলি। দেখবেন এই গ্রুপের বেশিরভাগই আসলে কোনো শিল্পচর্চার সঙ্গে সেই অর্থে জড়িত না। আমাদের মেইনস্ট্রিম (মানে টেলিভিশন, ওটিটি, এবং ফিল্মে যারা প্রধান শিল্পী; তথাকথিত এফডিসি বোঝানো হয়নি মেইনস্ট্রিম শব্দটা দিয়ে) অভিনয় শিল্পী বা ফিল্মমেকারদের কেউই এদের সঙ্গে নেই। এরাই আমাদের প্রেজেন্ট অ্যান্ড ফিউচার।’
এছাড়া স্ক্রিনশটগুলো নিয়ে সমালোচনার মধ্যে আলোচনায় উঠে এসেছেন গ্রুপে থাকা ১৬০ সদস্যের নাম। এই সদস্য তালিকায় রয়েছে অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবুর নামও। এবার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন তিনি।
ফেসবুকে এক পোস্টে অভিনেতা বাবু লিখেছেন, ‘হোয়াটসঅ্যাপে “আলো আসবেই” গ্রুপে অ্যাড হওয়া প্রসঙ্গে আমার কিছু কথা, একটা গ্রুপের অ্যাডমিনের কাছে ফোন নম্বর থাকলেই তিনি সেই গ্রুপে যাকে খুশি, যতজন খুশি অ্যাড করতে পারেন। আবার এমন অনেক গ্রুপ আছে সেখান থেকে চাইলেও কেউ বের হতে পারে না। যদি অ্যাডমিন তাকে ডিলিট না করে।’ এ অভিনেতা লিখেছেন, ‘আলো আসবেই গ্রুপে আমি কখনো প্রবেশ করিনি বা কে কী লিখছে, আমি যদি ওখানে না দেখি, আমি কী করে জানব ওখানে কী লিখছে? ঢালাওভাবে কাউকে দোষারোপ করা বা সমালোচনা করা ঠিক না।’
অন্যদিকে অভিনেত্রী মনিরা মিঠুর দাবি, আলো আসবেই গ্রুপের মতো আরও একটি গোপন গ্রুপ আছে। নিজের ফেসবুকে পোস্ট করে এ কথা জানান মিঠু। তবে পোস্টটি করার কিছুক্ষণ পর তার ফেসবুকে সেটি আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
মনিরা মিঠু নিজে থেকেই মুছে দিয়েছেন কিনা এমন প্রশ্ন যখন উকি দিচ্ছে মনে তখন গণমাধ্যমকে অভিনেত্রী জানান, পোস্টটি তিনি মুছে দেননি এবং নিজেও বুঝতে পারছেন না তার পোস্ট বারবার ডিলিট হওয়ার কারণ কি! এরপর এ বিষয়ে ফেসবুকে একটি পোস্টও করেন মনিরা মিঠু।
You must be logged in to post a comment.