ছাত্র-জনতার অভ্যুথানে সাবেক আওয়ামী সরকারের পক্ষে থাকা ছোট পর্দার অভিনেত্রী শমী কায়সারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জুলাই বিপ্লবে বেশ কয়েকজন ছাত্র-জনতা আহত হলে তারা শমী কায়সারের নামে হত্যাচেষ্টার মামলা দ্বায়ের করেন। সেই মামলার আসামি হিসেবেই, রাজধানীর উত্তরা থেকে এই অভিনেত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের পর শমী কায়সারের অপরাধনামার বেশকিছু চাঞ্ল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে। ছোট পর্দায় অভিনয়ের মাধ্যমে নিজের ক্যারিয়ার শুরু করা শমী কায়সার, রাজনীতির মাঠের নিজের সরব উপস্তিতির বার্তা দিয়েছিলেন বেশ কয়েকবার। তাইত অভিনয়ের জগতে ততটা উজ্জ্বল হতে না পেরে নিজের রাজনৈতিক প্রভাব ও আওয়ামী নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার মাধ্যমে গত বছর দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) পরিচালক নির্বাচিত হন।
এফসিসিআইয়ের পরিচালক পদে বসেই যেন আলাদিনের চেরাগ পেয়ে যান এই অভিনেত্রী। ব্যবসায়ী সংগঠনের উচ্চপদস্থ্য এই পদে বসেই শুরু করেন নিজের প্রভাব বিস্তারের কাজ ও নানা অরাজকতা। অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমেই ছোট পর্দার এই অভিনেত্রী রাতারাতি হয়ে ওঠেন হাজার কোটি টাকার মালিক।
এদিকে ই-কর্মাস প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ই-ক্যাবের সভাপতিও ছিলেন শমী। যদিও ১৪ আগস্ট এই পদ থেকে পদত্যাগ করে আত্নগোপনে চলে যান।
শমী কায়সারের বিরুদ্ধে জুলাই বিপল্বে ছাত্র-জনতার হত্যাচেষ্টা ছাড়াও ১৪ অক্টোবর মাগুরা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নিয়ে বিভিন্ন সময় কটূক্তি করার অভিযোগে অভিনেত্রী শমী কায়সারের নামে ১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলাও করা হয়েছিল।
এদিকে শমী কায়সারের দাম্পত্য জীবনও ছিলো বেশ রোমাঞ্চকর। যেখানে একাধিক ক্ষমতাশীল ব্যক্তির সঙ্গে নিজের স্বার্থ আদায়ে বিবহের সম্পর্কে জড়ান এই অভিনেত্রী। যেখানে নিজের অভিনয় জীবনে আলো ফোটাতে, কলকাতার জিনপ্রিয় নির্মাতা রিঙ্গো ব্যানার্জিকে বিয়ে করেছিলেন। এরপর দেশে নিজের রাজনৈতিক পরিচয় তৈরির লক্ষে সাবেক আওয়ামী সরকারের ঢাকা ১৭ আসনের এমপি মোহাম্মাদ এ আরাফাতকেও ২০০৮ সালে বিয়ে করেছিলেন শমী কায়সার। এছাড়া আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গেও এই অভিনেত্রীর সম্পর্ক ছিল।
সবশেষ ২০২০ সালে টাকার লোভে আবারো বিয়ে করের শমী কায়সারকে। তার নতুন এই স্বামী ছিলেন আমিন ইউরো ভিজিল প্রাইভেট লিমিটেড কম্পানির সিইও।
নব্বই দশকের একজন নামকরা অভিনেত্রী ও প্রযোজক হিসেবেও পরিচিত শমী কায়সার, ক্ষমতাচুত্য আওয়ামী সরকারের চাটুকারিতা করে তৈরি করেছিলেন বিশাল এক সম্পদের পাহাড়, তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিভিন্ন মন্তব্য করে ও হত্যাচেষ্টায় অভিযুক্ত হয়ে শেষমেষ কারাগারেই ঠাই হলো এই অভিনেত্রীর।
You must be logged in to post a comment.